সংক্ষিপ্ত
২০২১ সালের লোই ইনস্টিটিউট এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স (Lowy Institute Asia Power Index 2021) অনুযায়ী এশিয়ার চতুর্থ শক্তিশালী দেশ হল ভারত। অনেক পিছনে পাকিস্তান-সহ (Pakistan) অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলি।
২০২১ সালের লোই ইনস্টিটিউট এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স (Lowy Institute Asia Power Index 2021) অনুযায়ী এশিয়ার চতুর্থ শক্তিশালী দেশ হল ভারত। গত বছরও এই স্থানেই ছিলাম আমরা। ফলে এই বছরও এশিয়ার মধ্যমমানের শক্তি হিসেবেই রয়ে গেল আমাদের দেশ। এই ইনডেক্সে ভারতের সামগ্রিক স্কোর ২০২০ সালের তুলনায়, এই বছর আরও দুই পয়েন্ট কমে গিয়েছে। তাই আবারও প্রধান শক্তি হওয়ার নির্ধারিত মানের পিছনেই থেকে গেল ভারত। তবে শুধু ভারতই নয়, এই বছর এই অঞ্চলের মোট আঠারোটি দেশেরই সামগ্রিক স্কোর গত বছরের তুলনায় নিম্নমুখী। অনেক পিছনে পড়েছে পাকিস্তান।
২০১৮ সালে লোই ইনস্টিটিউটের (Lowy Institute) পক্ষ থেকে বার্ষিক এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স তৈরি চালু করা হয়েছিল। সম্পদ এবং প্রভাবের পরিমাপ করে, এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাষ্ট্রগুলির আপেক্ষিক ক্ষমতার ক্রমতালিকা তৈরি করা হয়। এই ইনডেক্স থেকে একদিকে যেমন এই অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলির বর্তমান শক্তির বন্টন পরিমাপ করা যায়, অন্যদিকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য কীভাবে বদলাচ্ছে, তাও বোঝা যায়।
লোই ইনস্টিটিউট যে ৮টি শক্তিস্তম্ভের উপর ভিত্তি করে এই ইনডেক্স তৈরি করা হয়, তার মধ্যে ভারত সেরা ফল করেছে, 'ভবিষ্যত সম্পদ পরিমাপে'। এই ক্ষেত্রে ভারত রয়েছে তৃতীয় স্থানে, আগে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন। তবে, করোনাভাইরাস মহামারি কারণে অর্থনীতির বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেকটাই নষ্ট হওয়ার ফলে, এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের '২০৩০ সালের জন্য অর্থনৈতিক পূর্বাভাস' খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। অর্থনৈতিক সক্ষমতা, সামরিক সক্ষমতা, স্থিতিস্থাপকতা এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব - এই চারটি ক্ষেত্রে ভারত চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
তবে মূলত দুটি ক্ষেত্রে দুর্বলতার কারণেই ভারত এবারও এশিয় অঞ্চলের প্রথম সারির শক্তিগুলির একটি হয়ে উঠতে পারেনি - প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক। আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা কূটনীতিতে ভারত অগ্রগতি দেখিয়েছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে কোয়াড নিরাপত্তা আলোচনা বড় প্রভাব ফেলেছে। তারপরও, ভারত এই ক্ষেত্রে সপ্তম স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, আঞ্চলিক বাণিজ্য একীকরণ প্রচেষ্টায় আরও পিছিয়ে পড়ায়, ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অষ্টম স্থানে নেমে এসেছে।
উপলব্ধ সংস্থান অনুযায়ী প্রত্যাশার কম প্রভাবের ক্ষেত্রে, এই ইনডেক্সে 'নেগেটিভ পাওয়ার গ্যাপ স্কোর' দেওয়া হয়। অর্থাৎ, ক্ষমতা থাকলেও, কোন দেশ সেই তার উপযুক্ত প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না, তা নির্দেশ করে এই ধরা স্কোর। ভারতের নেগেটিভ পাওয়ার গ্যাপ স্কোর কিন্তু আগের বছরের তুলনায় আরও খারাপ হয়েছে।
তবে প্রতিবেশী দেশগুলির তুলনায় ভারত অনেক এগিয়ে আছে। একমাত্র চিন বাদে আর কেউ ভারতের ধারে কাছে নেই। ২০২১ সালের লোই ইনস্টিটিউট এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, পাকিস্তান রয়েছে ১৫তম স্থানে। এছাড়া বাংলাদেশ ১৯তম, শ্রীলঙ্কা ২০তম, মায়ানমার ২১তম, নেপাল ২৫তম, ভুটান প্রথম ২৬টি দেশের মধ্যেই নেই। এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা ১০ টি শক্তিশালী দেশ হল যথাক্রমে - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, জাপান, ভারত, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড।