বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণদীপ জয়সওয়াল বলেন, ‘‘পাকিস্তানের নেতাদের ক্রমাগত ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য আমরা লক্ষ্য করেছি। এটা পাকিস্তানের পুরনো, সুপরিচিত কৌশল। জনগণের দৃষ্টি তাদের ব্যর্থতা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা ভারতর হুমকি দিচ্ছে। এটা পুরনো নাটক।’’
পাকিস্তানের ক্রমাগত যুদ্ধের হুমকির জবাবে ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। ‘‘এটা পাকিস্তানের পুরনো নাটক। আমরা এটা ভালো করেই জানি। পাকিস্তান যদি কোনো ভুল করে, তাহলে এর পরিণতি খুবই ভয়াবহ হবে,’’ বলে সতর্ক করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
এ বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণদীপ জয়সওয়াল বলেন, ‘‘পাকিস্তানের নেতাদের ক্রমাগত অযৌক্তিক, যুদ্ধোন্মাদ ও ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য আমরা লক্ষ্য করেছি। এটা পাকিস্তানের পুরনো, সুপরিচিত কৌশল। জনগণের দৃষ্টি তাদের ব্যর্থতা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তারা ভারতের বিরুদ্ধে বারবার হুমকি দিচ্ছে। এটা একটা পুরনো নাটক।’’

পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করার ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে ভারতকে হুমকি দিয়ে আসছেন। ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে শরিফ বলেন, ‘‘আমাদের জল বন্ধ করার চেষ্টা করলে, তোমাদের কান ধরে এমন একটা শিক্ষা দেওয়া হবে যে তোমরা ভুলে যাবে না।’’ এর একদিন আগে পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করা সিন্ধু সভ্যতার উপর আক্রমণ। যুদ্ধে আমাদের ঠেলে দিলে আমরা পিছু হটব না।’’
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বলেন, ‘‘ভারত যদি জল বন্ধ করে, তাহলে পাকিস্তান সেই বাঁধ উড়িয়ে দেবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত যখন বাঁধ নির্মাণ করবে, তখন আমরা অপেক্ষা করব। তারপর সেটা ধ্বংস করব। সিন্ধু নদী ভারতীয়দের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। ভারতের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার জন্য আমাদের কাছে সব ধরনের সম্পদ আছে।’’ আমেরিকা সফরকালে ফ্লোরিডায় এক অনুষ্ঠানে মুনির পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অস্তিত্বের উপর হুমকি এলে, আমরা ভারতকে পরমাণু যুদ্ধে ঠেলে দেব, যার প্রভাব বিশ্বের প্রায় অর্ধেকে অনুভব করবে।’’

২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দ্রুত অবনতি হয়েছে। এই হামলায় অনেক নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। এর জন্য পাকিস্তানের জঙ্গিদের সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। এরপর ভারত বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথমত, সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাস থেকে আমাদের রাষ্ট্রদূতদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পহেলগাম হামলার পর, সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছে। চার দিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময় এবং ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা চলেছে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় বিমানবাহিনী সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অনেক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ভারত সফলভাবে প্রতিহত করেছে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণদীপ জয়সওয়াল বলেন, ‘‘পাকিস্তানকে আমরা তাদের বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সতর্ক করে দিচ্ছি। যেকোনো পদক্ষেপের জন্য তাদেরকে বড় মূল্য দিতে হবে। পাকিস্তানের ইতিহাস এ ধরনের ফাঁকা বুলি দিয়ে ভরা। তাদের উদ্দেশ্য হলো অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা ঢেকে রাখা, এটা বিশ্ব জানে,’’ বলে তিনি ফের সতর্ক করেছেন।


