সংক্ষিপ্ত
- জুলাই মাসেই দেশের মাটি ছুঁতে চলেছে রাফাল যুদ্ধবিমান
- চলতি মাসেই ভারতে আসার কথা ছিল ৪টি রাফালের
- কিন্তু করোনভাইরাস লকডাউনের কারণে দু'মাস দেরি হচ্ছে
- ৪ টি বিমান জুলাইয়ের শেষের দিকে আম্বালায় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে পৌঁছবে
আগামী জুলাই মাসে আরও শক্তিবৃদ্ধি ঘটতে চলেছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর। জুলাই মাসের শেষেই তাঁদের হাতে আসতে চলেছে ৪টি রাফাল ফাইটার জেট। যদিও চলতি মাসেই ভারতে আসার কথা ছিল ফ্রান্সের দাঁসো এভিয়েশনের তৈরি রাফাল ফাইটার জেটের। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী র কারণে মাস দুয়েক সময় পিছোতে হল। ইউরোপের দেশগুলির মত ফ্রান্সেও করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই কারণে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাফালের প্রডাকশন বন্ধ রাখতে হয় দাঁসো অ্যাভিয়েশনকে। সেই কারণে মে মাসে না হলেও জুলাই মাসের শেষে প্রথম ৪টি রাফাল ফাইটার জেট তাঁরা ভারতের হাতে তুলে দিতে পারবে বলে জানিয়েছে যুদ্ধবিমান নির্মাতা এই ফরাসি সংস্থাটি।
সুতরাং জুলাই মাসেই দেশের মাটি ছুঁতে চলেছে রাফাল যুদ্ধবিমান। জানা যাচ্ছে, ৪টি রাফালের মধ্যে ৩টি দুই সিটের প্রশিক্ষক বিমান এবং বাকি একটি সিঙ্গেল সিটের ফাইটার বিমান। ৪ টি বিমান জুলাইয়ের শেষের দিকে আম্বালায় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে পৌঁছবে। প্রথম বিমানটি চালাবেন ১৭ গোল্ডেন অ্যারো স্কয়্য়াড্রনের কমান্ডিং অফিসার। সঙ্গে থাকবেন একজন ফরাসি পাইলট।
ইতিমধ্যেই সাত ভারতীয় পাইলটের প্রথম ব্যাচ রাফাল চালানোর প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। লকডাউন উঠলেই দ্বিতীয় ব্যাচ শীঘ্রই প্রশিক্ষণ নিতে ফ্রান্সে যাবে। এদিকে ট্রেনার এয়ারক্রাফ্টগুলির টেল নম্বর হবে এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদুরিয়ার নামে। ফ্রান্স থেকে কেনা প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমানের টেল নম্বর রাখা হয়েছিল তাঁর নামেই ‘আরবি ০১’।
সূত্রের খবর, ফ্রান্স থেকে ভারতে আসার দু'বার মাঝ আকাশে তেল ভরা হবে বিমানে। একবার মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছনোর আগে, আরেকবার মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভারতে আসার পথে। একবার তেল ভরবে ফ্রান্সের বায়ুসেনা, আরেকবার ভারতীয় বায়ুসেনার অয়েল ট্যাঙ্কার বিমান।
আরও পড়ুন: একা করোনায়া রক্ষা নেই, ভূমিকম্প দোসর, গত একমাসে ৪ বার কাপঁল দেশের রাজধানী
গতবছর অক্টোবরে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাফাল বিমানের মালিকানা পায় ভারত। ফ্রান্সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাছ সিংয়ের উপস্থিতিতে প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর দেশের প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে রাফালে চেপে কিছুক্ষণ আকাশেও ওড়েন রাজনাথ।
২০১৬-র সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের সরকারের সঙ্গে রাফাল কেনা নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ভারতের। মোট ৩৬টি রাফাল কেনার বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল। ফ্রান্সের রাফাল নির্মাতা সংস্থা ‘দাঁসো অ্যাভিয়েশন’ জানিয়েছিল, মোট ৫৯ হাজার কোটি টাকা দামের ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান তারা তুলে দেবে ভারতের হাতে। সবক’টি যুদ্ধ বিমান এদেশে পৌঁছবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
এমনিতে রাফালের পরিচিতি বিশ্বের প্রথম সারির যুদ্ধবিমান হিসেবে। যা বিমানঘাঁটি কিংবা সমুদ্রের বুকে ভাসতে থাকা বিমানবাহী জাহাজের রানওয়ে থেকে উড়ে গিয়ে শত্রুঘাঁটিতে হামলা চালাতে সক্ষম। কিন্তু মোদী সরকারের প্রথম দফায় রাফাল কেনা ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় জলঘোলা হয়েছে বিস্তর।
সামরিক পরিভাষায় রাফালকে বলে ‘মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট’। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। রাফালকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ‘মেটিওর’ এবং ‘স্কাল্প’ নামে দুটি মিসাইলও যোগ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। লক্ষ্যসীমার বাইরে নিপুণ আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ‘মেটিওর’। আর ‘স্কাল্প’ হল লো-অবজার্ভর ক্রুজ মিসাইল। এটি ব্যবহার করে ব্রিটিশ ও ফরাসি বায়ুসেনা। পাকিস্তান ও চিনের আগ্রাসন বন্ধ করতে রাফাল ফাইটার জেট বায়ুসেনার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবে বলেই আশা করা যায়।