সংক্ষিপ্ত
ভারত-কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। খালিস্তানিদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে কানাডাকে আক্রমণ করছে ভারত। এরই মধ্যে দেশের অভ্যন্তরেও কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্র।
সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের জায়গা না দেওয়ার জন্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলির প্রতি নির্দেশিকা জারি করল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ভারত-কানাডার কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে এই নির্দেশিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে খালিস্তানপন্থী গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনের সাক্ষাৎকার দেখা যায়। সেই সাক্ষাৎকারে এই 'ওয়ান্টেড' জঙ্গি কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে। পাঞ্জাব, মণিপুর নিয়ে কথা বলে পান্নুন। সে খালিস্তানের প্রসঙ্গও তোলে। এরপরেই টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে জঙ্গিদের কোনওরকম সুযোগ না দিতে বলল কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকায় অবশ্য পান্নুন বা কানাডার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, খালিস্তানপন্থীদের প্রচারের সুযোগ না দিতেই এই ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্র।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেছেন, খালিস্তানপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতের হাত রয়েছে। তাঁর এই অভিযোগের পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কানাডার এক কূটনীতিবিদকে ভারত থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবার সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করা হল।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই মন্ত্রকের নজরে এসেছ, বিদেশে থাকা ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ-সহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে, যে এমন একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত যেটি ভারতের আইনে নিষিদ্ধ, সেই ব্যক্তিকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এমন কিছু মন্তব্য করে যা দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতার পক্ষে বিপজ্জনক। তার মন্তব্য ভারতের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক, একটি দেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে, এমনকী দেশে বিশৃঙ্খলাও তৈরি করতে পারে। সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। সংবিধান অনুযায়ী সংবাদমাধ্যমের অধিকারের প্রতিও সরকার শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু টেলিভিশন চ্যানেলে যে সমস্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে, সেগুলি যেন ১৯৯৫ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্কস আইন অনুযায়ী হয়। সেই কারণেই টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, এমন কোনও ব্যক্তিকে মঞ্চ দেবেন না, যার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ বা সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ রয়েছে এবং যে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের এই নির্দেশিকার পর সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আর ভারতের কোনও টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন-
India-Canada Tension: কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করল নয়াদিল্লি
হোটেলে তৈরি হল নাটকীয় পরিস্থিতি, ভারতের দেওয়া প্রেসিডেন্ট স্যুট প্রত্যাখ্যান করলেন জাস্টিন ট্রুডো