দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণের আগের ছয় মাস চরমপন্থার বিরুদ্ধে এই নীরব, অবিচল যুদ্ধের প্রমাণ দেয়। এই সময়ে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বিভিন্ন ধরনের হুমকিকে লক্ষ্য করে একাধিক নিষ্পত্তিমূলক অভিযান চালায়।
জঙ্গি হামলা হলে গোটা দেশ নড়ে যায়। চলে কারণ অনুসন্ধান, অভিযুক্তের খোঁজ। কখনও আসে সাফল্য, কখনও ব্যর্থতা। দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণের আগের ছয় মাস একটার পর একটা জঙ্গি নাশকতার ছক বানচাল করেছেন গোয়েন্দারা। চরমপন্থার বিরুদ্ধে এই নীরব, অবিচল যুদ্ধ চলছে অবিরত। এই সময়ে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি খলিস্তানি নেটওয়ার্ক এবং আইএস-অনুপ্রাণিত মৌলবাদী থেকে শুরু করে নারকো-টেরর সংযোগ এবং আল-কায়েদা-সম্পর্কিত মডিউলগুলিকে লক্ষ্য করে একাধিক নিষ্পত্তিমূলক অভিযান চালায়।
ভারতের নীরব যুদ্ধের অন্দরের কথা
মে মাসে, একটি গোয়েন্দা-চালিত অভিযানে বাটলায় বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল (BKI) মডিউলের পর্দাফাঁস হলে একটি বড় সাফল্য আসে। ২০ মে-র এই অভিযানে বিদেশি হ্যান্ডলার এবং এক পাকিস্তানি মাস্টামাইন্ডের সঙ্গে যুক্ত ছয় জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর একদিন আগে, ১৯ মে, হায়দ্রাবাদের গোয়েন্দা ইউনিট বিস্ফোরকসহ দুই আইএস-সম্পর্কিত সন্দেহভাজনকে আটক করে। সেই মাসের শুরুতে, ১১ মে, পশ্চিমবঙ্গের সংস্থাগুলি পাকিস্তানি নির্দেশে পরিচালিত জামাত-উল-মুজাহিদিন-লস্কর-ই-তৈয়বা সিন্ডিকেটকে ভেঙে দেয়।
জুলাই মাসে গুজরাট এটিএস, সহযোগী ইউনিটগুলির সাথে, ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার (AQIS) একটি সেলকে ভেঙে দেয়, যারা গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লি জুড়ে 'গাজওয়া-ই-হিন্দ' মতবাদ প্রচার করছিল। ১১ জুলাই, সেনা এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ পুঞ্চে জঙ্গিদের গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আইইডি, গ্রেনেড এবং অন্যান্য মারাত্মক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে।
আগস্টে, এনআইএ ভিজিয়ানগরম মডিউলের মূল অভিযুক্ত আরিফ হুসেন ওরফে আবু তালিবকে দিল্লির আইজিআই বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে নেপাল সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ছিল। এই মাসেই সংস্থাগুলি পাঞ্জাব ও রাজস্থানে BKI-বিষ্ণোই নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত বেশ কয়েকটি শিখ-বিরোধী জঙ্গি মডিউল ভেঙে দেয়।
সেপ্টেম্বরে একটি ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র ফাঁস হয় যখন ইউপি এটিএস চারজনকে আটক করে, যারা মুজাহিদিন আর্মি নামে একটি উগ্রপন্থী সংগঠন তৈরির চেষ্টা করছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল হিংসাত্মক জিহাদের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা এবং হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের নিশানা করা। প্রায় একই সময়ে, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল একটি সর্বভারতীয় জঙ্গি মডিউল ভেঙে দেয় এবং এক বড় অভিযানে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে।
অক্টোবরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের গতি আরও বাড়ে। কর্তৃপক্ষ পাঞ্জাব সীমান্তে একটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও আফিমের চক্র ফাঁস করে, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র জুড়ে সক্রিয় জইশ-ই-মহম্মদ নেটওয়ার্ককে নিষ্ক্রিয় করে এবং পাঞ্জাবে একটি ২.৫ কেজির আইইডি উদ্ধার করে। ২৭ অক্টোবর, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল আবার হানা দেয় এবং 'সৌত-উল-উম্মাহ' নামে একটি আইএস-সম্পর্কিত মডিউল ফাঁস করে, যার ফলে দুই কট্টরপন্থী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।


