ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, তিনি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়েছিলেন। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর সেই দাবি নাকচ করেছেন। 

জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাওতে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পর ভারতীয় সেনাবাহিনী 'অপারেশন সিঁদুর' নামে পাকিস্তানে ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। শত শত জঙ্গি নিহত হয়। এরপর পাকিস্তান ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে ড্রোন হামলার চেষ্টা করে।

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত

প্রত্যুত্তরে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কিছু বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় এবং তাদের ড্রোন ও বিমান ভূপাতিত করে। এরপর আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের অবসান ঘটে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা বিতর্কের সৃষ্টি করে। ট্রাম্প বলেন, 'আমেরিকার মধ্যস্থতায় রাতভর আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক শান্তিতে সম্মত হয়েছে।'

ট্রাম্পের দাবি

এরপর ট্রাম্প বারবার দাবি করেন, 'আমিই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়েছি। আমি দুই দেশকে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছিলাম, তাই তারা যুদ্ধ থামিয়েছে।' কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, তৃতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপ ছাড়াই পাকিস্তানের অনুরোধে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল।

জয়শঙ্করের ব্যাখ্যা

এক সাক্ষাৎকারে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ট্রাম্পের দাবি নাকচ করে বলেন, '৯ মে রাতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স যখন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে কথা বলছিলেন, আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ভ্যান্স বলেছিলেন, ভারত কিছু বিষয় না মানলে পাকিস্তান বড় ধরনের হামলা চালাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী পাকিস্তানের হুমকিতে ভয় পাননি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ভারত পাকিস্তানকে জবাব দেবে।'

আসল ঘটনা

'সেই রাতেই পাকিস্তান বড় ধরনের হামলা চালায়। আমরাও তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা জবাব দিই। পরদিন সকালে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও আমাকে ফোন করে জানান, পাকিস্তান আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এটাই বলতে পারি।'

ট্রাম্পের বক্তব্য কি বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে?

ট্রাম্পের বক্তব্য কি ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনায় প্রভাব ফেলবে? জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, 'আমি তা মনে করি না। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা তাদের কাজ ঠিকভাবেই করছেন। তারা খুবই পেশাদার এবং সতর্ক।'

পারমাণবিক হুমকিতে ভারত ভয় পায় না

পাহলগাম হামলাকে 'অর্থনৈতিক যুদ্ধ' হিসেবে বর্ণনা করে জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের কোনও শাস্তি ছাড়াই কাজ করতে দেওয়া হবে না। পারমাণবিক হুমকিতে ভারত কখনও ভয় পায় না। পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারমাণবিক হুমকিকে বাধা হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।