সংক্ষিপ্ত

ঘুমের মধ্য়েই আচমকা এল হড়পা বান, ভেসে গেল একটা গোটা গ্রাম। জম্মু-কাশ্মীরের কিস্তওয়ার জেলার এই ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত, আরও অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ।
 

বুধবার ভোরে আচমকা মেঘ ফাটা বৃষ্টিতে এল হড়পা বান, ভেসে গেল জম্মু-কাশ্মীরের পর্বত-সঙ্কুল কিস্তওয়ার জেলার দাচান ব্লকের হাঞ্জার গ্রাম। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত জানা গিয়েছে। আরও অন্তত ৩০ জন ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। হাঞ্জার-এর এসএইচওর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গিয়ে, গুরুতর আহত অবস্থায় বারোজন গ্রামবাসীকে উদ্ধার করেছে।

পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, এদিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ, আচমকা হাঞ্জার গ্রামে মেঘ ফাটা বৃষ্টিতে হড়পা বান এসেছিল। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই তখন ঘুমোচ্ছিলেন। সেই অবস্থাতেই বিপর্যয় নেমে আসে তাদের উপর। পাঁচ থেকে ছয়টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বন্যার জলে ধুয়ে গিয়েছে। ঘুমের মধ্যেই বন্যার জলে ভেসে গিয়েছে ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষ। পুলিশ এখনও পর্যন্ত সাতদজনের মরদেহ উদ্ধার করে পেরেছে। তবে এই বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ পুলিশের হিসাব অনুযায়ী ৩০ জনেরও বেশি মানুষকে এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

তবে, ইনিমধ্যেই উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ-এর পাশাপাশি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) এবং ভারতীয় সেনা ঘটনাস্থলে এসে গিয়েছে। তবে ওই এলাকায় এখনও অবিরাম বৃষ্টি পড়ে চলেছে। এই কারণে উদ্ধারকাজ বারবার ব্যহত হচ্ছে। তার পাশাপাশি ওই অঞ্চলে এই মুহূর্তে সড়ক যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন। ফলে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে আসা দলগুলিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য কয়েক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেই আসতে হচ্ছে। 

আরও পড়ুন - ৪০ বছরে রেকর্ড বৃষ্টি, রায়গড়ে মৃত বেড়ে ৪৪ - ভয়াবহ বন্যায় বেহাল মহারাষ্ট্র, দেখুন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছেন কিস্তওয়ার ও কার্গিলের মেঘ ফাটা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলিতে সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও পুলিশের ডিজির সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং দাচানের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলেছেন। আহতদের উড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহাও এই বিপর্যয়ে শোক প্রকাশ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ধার অভিযানে দ্রুততা আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কার্গিল জেলায় দুটি এলাকায় মেঘ ফাটা বৃষ্টি নেমে এসেছিল। একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং কয়েকটি ঘরবাড়ির ক্ষতি হলেও সেইক্ষেত্রে কেউ হতাহত হননি। প্রথমটি ঘটেছিল কার্গিল থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে কার্গিল-লেহ হাইওয়ের ধারে খানগ্রাল গ্রামে এবং দ্বিতীয়টি কারগিল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে জংস্কার রোডের ধারে সাঙ্গরাতে।

আরও পড়ুন -তাওয়াই নদীতে হড়পা বান, দুঃসাহসী উদ্ধার অভিযান বায়ুসেনার, দেখুন ভিডিও

আরও পড়ুন -ডুয়ার্সের নদীতে হড়পা বান, বরাতজোরে রক্ষা পেলেন মহিলা

তবে জম্মু ও কাশ্মীরের আবহাওয়ার সংক্রান্ত ভোগান্তি এখানেই শেষ হচ্ছে না। দিল্লির মৌসম ভবন থেকে এই বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজৌরি, রিয়াসি এবং আশেপাশের কয়েকটি অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। যার ফলে বিশেষত নিম্নাঞ্চলে বন্যা, কাদাধস, ভূমিধস এবং বহু জায়গায় জল জমে যেতে পারে।