সংক্ষিপ্ত


সম্প্রতি বিতর্কিত টুইট ঘিরে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) নবনিযুক্ত উপাচার্য সন্তিশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিত (Santishree Dhulipudi Pandit)। তাঁর দাবি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) লোক বলেই, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে বামেরা। 

নিয়োগের পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) নবনিযুক্ত উপাচার্য সন্তিশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিত (Santishree Dhulipudi Pandit)। বিতর্ক আরও বেড়েছে চলতি সপ্তাহের সোমবার। তাঁর নামে থাকা একটি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে করা একটি বিতর্কিত টুইট নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যার জেরে ডিলিটও করে দেওয়া হয় টুইটটি। তবে, জেনেইউ-এর নয়া উপাচার্যের দাবি, ওই টুইট তাঁর করা নয়। বস্তুত, তাঁর কোনও টুইট অ্যাকাউন্টই নেই। তিনি মোদীর লোক বলে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে বামেরা। 

কী ছিল ওই বিতর্কিত টুইটে? 

সন্তিশ্রীর নামে থাকা ওই হ্যান্ডেল থেকে করা টুইটে, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া (Jamia Millia Islamia University) এবং সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের (St Stephen’s College) মতো নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে 'সাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাস' বলা হয়েছিল।  এছাড়া, কটু ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল ভারতীয় খ্রিস্টানদের (Indian Christians) উদ্দেশ্যে। নাগরিক অধিকার কর্মীদের 'মানসিকভাবে অসুস্থ জিহাদি' বলা হয়েছিল। আর এই টুইট নিয়েই উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। এই ধরণের বক্তব্য যিনি রাখতে পারেন, তাঁকে কীকরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হল, তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এরপরই অবশ্য সেই টুইট মুছে ফেলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন - পুলিশ বলছে শ্লীলতাহানি, পড়ুয়াদের দাবি ধর্ষণের চেষ্টা, JNU কাণ্ডে ফের বাড়ছে চাপানউতর

আরও পড়ুন - প্রথম মহিলা উপাচার্য পাচ্ছে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, জানুন সান্তিশ্রী ধুলিপুড়ি পণ্ডিতকে

আরও পড়ুন - 'মোদীর লোক বলে বামেদের ষড়যন্ত্র', টুইটার বিতর্কে জেনেইউ উপাচার্যের সাফাই

অ্যাকাউন্ট ছিল না, হ্যাক করা হয়েছে

তবে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী সন্তিশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিত এখন দাবি করছেন, তাঁর কোনও টুইটার অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাঁরা জানতে পেরেছেন, অ্যাকাউন্টটি জেএনইউ-এর ভিতরেরই কেউ হ্যাক করেছে। তাঁর কখনই কোনও টুইটার অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাঁর মেয়ে একজন সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার। বছর ছয়েক আগে তিনিই সন্তিশ্রীকে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে থাকতে নিষেধ করেছিলেন। তাঁর টুইট নিয়ে সমালোচনা হওয়ার পর, বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছিল বলে দাবি করেছেন জেএনইউ-এর উপাচার্য। আগে কেউ তাঁকে খবর দেয়নি। সব মিলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি চক্র কাজ করছে বলে মনে করছেন তিনি। 


কিন্তু, কেন তাঁকে এভাবে নিশানা করা হচ্ছে? 

সন্তিশ্রীর দাবি, তিনি জেএনইউ-এর প্রথম মহিলা উপাচার্য হওয়ায় অনেকেই অসন্তুষ্ট। কারণ, তাঁকে নিয়োগের মাধ্যমে জেএনইউ-এ এতদিন পর্যন্ত কোনও মহিলা উপাচার্য না হওয়ার ট্য়াবু ভেঙেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। তিনি শুধু মহিলা নন, দক্ষিণ ভারতের রাজ্য তামিলনাড়ুর মহিলা। 'সত্তর বছর ধরে ক্ষমতায় থেকেও' তাঁর মতো কোনও 'প্রান্তিক' ব্যক্তিত্বকে বামেরা উপাচার্য করেনি। প্রধানমন্ত্রী মোদী এটা করেছেন, তারা মেনে নিতে পারছে না। সন্তিশ্রীর আরও অভিযোগ, এর আগে ইতিহাসে বামেরা তাদের অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করেছিল। তাই তিনি ইতিহাস সংশোধন করতে চান। 'ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি'র দিকে মনোনিবেশ করাতেই তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে। 

যুক্তিতে অসঙ্গতি

তবে এখানেই জেএনইউ-এর নবনিযুক্ত উপাচার্যের টুইট বিতর্কের অবসান হচ্ছে না। সন্ত্রিশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিতের যুক্তিতে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করছেন সমালোচকরা। তাঁরা বলছেন, সন্তিশ্রীর যদি কখনও কোনও টুইটার অ্যাকাউন্ট নাই থাকে, তাহলে হ্যাক করা হয়েছে কেন বলছেন তিনি? এক মুখে দুই রকম কথা বলছেন জেএনইউ-এর উপাচার্য, এমনটাই অভিযোগ তাঁদের। এই ঘটনার জল এখন কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।