সংক্ষিপ্ত

১০ বছর ধরে একার উদ্যোগে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলেন ডিভোর্সি মহিলা

হঠাতই তাঁর দোকানে হানা দিয়ে গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেছিল মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ

গত ৬ মাস ধরে নিজের সুনাম উদ্ধার করতে লড়লেন তিনি

শেষে দেখা গেল এর পিছনে রয়েছে প্রেমে প্রত্যাখ্যানের এক কাহিনি

চলতি বছরের জানুয়ারিতে, কেরলের তিরুঅনন্তপুরম শহরের এক পোশাকের দোকান থেকে ৮৫০ গ্রাম গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেছিল কেরল পুলিশের মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ। স্বাভাবিকভাবেই গ্রেফতার করা হয়েছিল দোকানটির মালিক শোভা বিশ্বনাথ-কে। একদিন পরই তিনি জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর ব্যবসা দারুণ ক্ষতি হয়েছিল। যে ব্যবসা তিনি ১০ বছর ধরে তিলে তিলে বড় করে তুলেছিলেন। তবে, গত ৬ মাস ধরে লড়াই-এর পর অবশেষে জয় হয়েছে শোভার। জানা গিয়েছে, তাঁকে গাঁজার মামলায় ফাঁসানো হয়েছিলেন, নেপথ্যে রয়েছে প্রেমে প্রত্যাখানের কাহিনী।

গত ১০ বছর ধরে একক প্রচেষ্টায় শোভা বিশ্বনাথ 'উইভার্স ভিলেজ' নামে নিজের একটি পোশাকের দোকান চালান। গত ৩১ জানুয়ারি গাঁজার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দোকানে বিক্রিবাটা একেবারেই পড়ে গিয়েছিল। তবে শোভা, ওই ঘটনার পর, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশের ডিজি-র কাছে চিঠি লিখে ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন ক্রাইম ব্রাঞ্চকে। কী জানা গিয়েছে সেই তদন্তে?

তিরুঅনন্তপুরম অপরাধদমন শাখা জানিয়েছে, সাফ জানিয়েছে শোভা এই ঘটনার জন্য দোষী নন। তাঁর নামও এফআইআর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে দোষী কে? আসামি হিসাবে যুক্ত করা হয়েছে উইভার্স ভিলেজের কর্মচারী বিবেক রাজ এবং হরিশ নামে এক ব্যক্তিকে। এই হরিশ ছিলেন শোভার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কয়েকমাস আগে হরিশ, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া শোভাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু, শোবা তাতে সায় দেননি, না বলে দিয়েছিলেন।

শোভার অভিযোগ, তিনি না বলার পরও তা মেনে নেয়নি হরিশ। তখন থেকে বিভিন্ন জায়গায় পিছু নিত সে। জ্বালাতন করত। তাই, গাঁজার মামলায় ফাঁসার পর অপরাধ দমন শাখার অফিসারদের তিনি বলেছিলেন, হরিশ কিংবা তাঁর  প্রাক্তন স্বামীর হাত থাকতে পারে এই ঘটনার পিছনে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, হরিশের এই চক্রান্তে হাত মিলিয়েছিল শোভারই দোকানের কর্মচারী বিবেক রাজ। সে দোকানের আরও এক মহিলা কর্মীর সাহায্যে দোকানে ওই বিপুল পরিমাণ গাঁজা লুকিয়ে রেখেছিল। তারপর, তারাই খবর দিয়েছিল মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগে।  

আদালতে নিজের নাম কলঙ্কমুক্ত করার পর এশিয়ানেট নিউজকে শোভা জানিয়েছেন, 'গত দশ বছর ধরে একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য যে সুনাম আমি অর্জন করেছিলাম, তা হারাতে চাইনি বলেই আমি গত ছয় মাস ধরে লড়াই করে গিয়েছি'।