সংক্ষিপ্ত
আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত বলিউডের ‘বধাই হো’ সিনেমাটি যেমন বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান ধারণের গল্প দিয়ে সমাজকে আন্দোলিত করে দেয়, কেরলের ‘পার্বতী’-দম্পতির গল্পও বাস্তব দুনিয়ায় সেই আনন্দেরই জ্বলন্ত উদাহরণ।
সোশ্যাল দুনিয়ায় অপ্রত্যাশিত এবং অসাধারণ ঘটনা মাঝেমাঝেই তাক লাগিয়ে দেয় নেটিজেনদের চোখে। তেমনই, বাস্তব দুনিয়ায় ঘটে গেল বলিউড ফিল্ম ‘বাধাই হো’-এর আসল সংস্করণ। অগণিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
ঘটনার কেন্দ্রে একেবারে নায়কের জায়গায় রয়েছেন এক ২৩ বছর বয়সী তরুণী, যাঁর নাম আর্যা পার্বতী। প্রথমে ঘটনাটি জেনে তিনি সত্যিই খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, কারণ, স্বাভাবিকভাবেই এটা একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, সেই অপ্রত্যাশিত সংবাদটিই উত্তেজনা এবং আনন্দের ঢেউ নিয়ে এল তাঁদের পরিবারে। কারণ, ৪৭ বছর বয়সে আর্যার জন্য এক বোন-এর জন্ম দিলেন তাঁর মা।
ছোটবেলা থেকেই আরজার ইচ্ছে ছিল ‘বড় দিদি’ হওয়ার। কিন্তু, তাঁর মায়ের দ্বিতীয় প্রজনন ক্ষমতার সমস্যা হয়েছিল। এরপর ২৩ বছর বয়সে একটি ফোন কল তাঁর জীবনে আনন্দের ঢেউ নিয়ে এল। ঠিক গত বছর, তাঁর নির্ধারিত ছুটিতে বাড়ি ফেরার কয়েকদিন আগে, তাঁর মা তাঁকে উত্তেজিত অবস্থায় ফোন করেন। কয়েক মুহূর্ত ওই ফোন কলে অস্থির হয়ে ওঠার পর তিনি চিৎকার করে ওঠেন, ‘মা প্রেগন্যান্ট!’ খবরটি অপ্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু তাঁকে প্রচণ্ড খুশিতে পূর্ণ করেছিল। তাঁর মা যখন জানতে পারলেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই তাঁর গর্ভাবস্থার সাত মাসে রয়েছেন, তখন তাঁর বয়স ৪৭ বছর।
‘মায়ের শরীরে কোনও পরিবর্তনও বোঝা যায়নি। মা এবং বাবা একসাথে স্থানীয় একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন যেখানে মা হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। তখনই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ডাক্তার বলেন যে, মা গর্ভবতী হয়েছেন। তখন থেকেই আমি আর মা একসাথে সময় কাটাতে শুরু করি’, আনন্দের সঙ্গে এই সংবাদ প্রচার করেন আরজা নিজেই।
আর্যার বাবা-মা অবশ্য এই অস্বাভাবিক এবং নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে সুখবরটি কাউকে বলতে দ্বিধাগ্রস্ত এবং বিব্রত বোধ করেছিলেন। দেখা যায়, মা এবং মেয়ের মধ্যে বন্ধন এমন বয়স এবং সময়কে অতিক্রম ছাপিয়ে গিয়েছে। আর্যা বলেছেন, ‘গত সপ্তাহে মা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। জীবন এর চেয়ে বেশি কখনই অর্থপূর্ণ নয়।’
মানুষের কটাক্ষ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি অপেক্ষা করতে পারছি না যে, সে কখন আমাকে 'দিদি' বলে ডাকবে! লোকেরা এটিকে অদ্ভুত বলে মনে করে যে, আমাদের বয়সের এত বড় ব্যবধান রয়েছে। কিন্তু তাতে কি কিছু আসে যায়? এটাই আনন্দের বিষয় যে, দীর্ঘ সময় ধরে আমরা জানতাম না যে, সে আমাদের জীবনে আসবে এবং এখন সে এসেছে। আমরা তার থেকে দূরে থাকতে পারব না।’
আরও পড়ুন-
মরে যাওয়ার আগে বাবাকে সেলফি তুলে পাঠাল ছেলে, আত্মহত্যার কারণ জেনে হতবাক বাবা