সংক্ষিপ্ত

কপ্টার ভেঙে একাধিক দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিল দেশ। গত কয়েক দশকে একাধিকবার কপ্টার ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দেশের তাবড় ব্যক্তিত্বের।

ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) জেনারেল বিপিন রাওয়াত (Gen Bipin Rawat) সহ সেনার চার উচ্চপদস্থ অফিসারকে নিয়ে ভেঙে পড়ল ভারতীয় সেনার (Indian Army) কপ্টার (Helicopter Crash)। সূত্রের খবর সিডিএস বিপিন রাওয়াতের স্টাফ এবং পরিবারের সদস্যরাও এই এমআই-সিরিজ হেলিকপ্টারটিতে ছিলেন। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর এবং সুলুরের মধ্যে এক জায়গায় কপ্টারটি ভেঙে পড়ে। তবে এই ধরণের একাধিক দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিল দেশ। গত কয়েক দশকে একাধিকবার কপ্টার ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দেশের তাবড় ব্যক্তিত্বের। রইল তার তালিকা। 

তালিকায় রয়েছেন ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডি, সঞ্জয় গান্ধী, মাধবরাও সিন্ধিয়া, জি এম সি বালাযোগী, এস মোহন কুমারমঙ্গলম, ও পি জিন্দাল, সুরেন্দ্র সিং, ডেরা নাতুং, সি সাংমার মতো রাজনৈতিক নেতারা। রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী দোরজি খান্ডুর নামও। এমনও ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন কেউ কেউ। এরমধ্যে রয়েছেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। 

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডি (Andhra Pradesh Chief Minister Y S Rajasekhara Reddy)

অন্ধ্রের দুবারের মুখ্যমন্ত্রী রাজশেখর রেড্ডি ২০০৯ সালে রুদ্রাকোন্ডা পাহাড়ে হেলিকপ্টার ভেঙে মারা যান। তাঁর কপ্টারটি প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরে নিখোঁজ ছিল। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজশেখর রেড্ডির হেলিকপ্টার নাল্লামালা জঙ্গলের কাছে নিখোঁজ হয়ে যায়। ৩ সেপ্টেম্বর সকালে সংবাদমাধ্যম জানায় যে কুর্নুল থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে রুদ্রকোন্ডা পাহাড়ের চূড়ায় সেই হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। সেই দিনই পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয় এবং অন্যান্য আরোহীদের সঙ্গে রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর কথাও ঘোষণা করা হয়।

সঞ্জয় গান্ধী (Sanjay Gandhi)

সঞ্জয় গান্ধী (Sanjay Gandhi)। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর (Indira Gandhi) ছোট ছেলে এবং আরও এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ভাই। আকাশে বিমান ওড়ানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁর কপ্টার। ১৯৮০ সালের ২৩শে জুন ওলটপালট হয়ে যায় ভারতীয় রাজনীতির অনেক হিসেব। কারণ একসময় কংগ্রেসে তিনিই ছিলেন ইন্দিরার পর সেকেন্ড ইন কমান্ড। 

দোরজি খানডু (Dorjee Khandu)

অরুণাচল প্রদেশে প্রায়ই হেলিকপ্টার ও সেনা বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর বাবা দোরজি খান্ডু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন চপার দুর্ঘটনায় নিহত হন। ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল তাওয়াং থেকে ইটানগরে যাওয়ার পথে খান্ডু এবং আরও চার জনকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি নিখোঁজ হয়। দোসরা মে, আবহাওয়াজনিত কারণে আবহাওয়ার কারণে খান্ডুর বিমানের খোঁজে তল্লাশি বন্ধ করতে বাধ্য হয় উদ্ধারকারী দল। তল্লাশি পরে ফের শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী, পুলিশ, এসএসবি এবং ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ। ২০১১ সালের ৪ মে স্থানীয়রা লোকজন ভেঙে পড়া হেলিকপ্টারটির অবশিষ্টাংশ খুঁজে পায়। 

মাধবরাও সিন্ধিয়া (Madhavrao Scindia)

মাধবরাও সিন্ধিয়া, একজন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট মন্ত্রী, ৩০শে সেপ্টেম্বর,২০০১-এ একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার জন্য উত্তর প্রদেশের কানপুরে যাওয়ার সময় একটি সেনা বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন।

জি এম সি বালাযোগী (G M C Balayogi)

লোকসভার স্পিকার এবং তেলেগু দেশম নেতা জি এম সি বালাযোগী তেসরা মার্চ, ২০০২ সালে অন্ধ্র প্রদেশে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। বালাযোগী একটি বেল ২০৬ হেলিকপ্টারে ছিলেন। একটি সরকারী তদন্তের রায়ে বলা হয় যে পাইলট, দুর্বল দৃশ্যমানতার কারণে বিমান অবতরণ করানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় ভুলবশত এটি একটি খালি জায়গা ভেবে একটি পুকুরে অবতরণ করলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।

মোহন কুমারমঙ্গলম (Mohan Kumaramangalam)

কংগ্রেসের জনপ্রিয় নেতা মোহন কুমার মঙ্গলম ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের প্লেনদুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। দিল্লির কাছে ১৯৭৩ সালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

BREAKING: জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে নিয়ে ভেঙে পড়ল সেনার কপ্টার

CDS Bipin Rawat Chopper Crash: কেন দুর্ঘটনার কবলে বিপিন রাওয়াতের Mi-17, জানালেন প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মী

ও পি জিন্দাল (O P Jindal)

ও পি জিন্দাল, হরিয়ানার তৎকালীন বিদ্যুৎ মন্ত্রী এবং একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। ২০০৫ সালের ৩১শে মার্চ প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের কাছে কপ্টারটি ভেঙে পড়ে। 

অরুণাচল প্রদেশের ডেরা নাতুং ও সি সাংমা

অরুণাচল প্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডেরা ২০০১ সালের মে মাসে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। অন্যদিকে পি সাংমা, তৎকালীন মেঘালয়ের সম্প্রদায় উন্নয়ন মন্ত্রী, তিনজন বিধায়ক এবং অন্য ছয়জন ব্যক্তি ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন।

সুরেন্দ্র নাথ (Surendra Nath) 

পঞ্জাবের গভর্নর সুরেন্দ্র নাথ এবং তার পরিবারের নয়জন সদস্য নিহত হন কপ্টার দুর্ঘটনায়। ১৯৯৪ সালের ৯ই জুলাই হিমাচল প্রদেশে রাজ্য সরকারের সুপার-কিং বিমানটি খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে। উঁচু পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে সেখানেই ভেঙে পড়ে। উল্লেখ্য, সুরেন্দ্র নাথ তখন হিমাচল প্রদেশেরও ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল ছিলেন।