সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার সকাল থেকেই তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না
এমনটাই জানিয়েছিলেন স্বামী
সোমবার তাঁর খোঁজ মিলল তালাবন্ধ ব্যাঙ্কে
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই মহিলা ডাকাতের কাহিনি
হিসাবের একটু ভুল হয়ে গিয়েছিল। আর তার জন্য়ই ব্যর্থ হল ব্যাঙ্ক লুঠের পরিকল্পনা। শুধু তাই নয়, লুঠে করতে আসা মহিলাকে তিনদিন কাটাতে হল অনাহারেই। শেষে ধরাও পড়ে গেল সে। ঘটনাটি ঘটেছে মেঘালয়ে। এবং তখন থেকে তিনি একজন গৃহিণী ছিলেন," মারউইন বলেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ জুন সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ইসাবেলা মিরবো নামে শিলংয়ের বিষ্ণুপুরের নিউ কেন্চেস ট্রেস এলাকার বাসিন্দা, বছর ৪০-এর এক মহিলা। স্থানীয় এক থানায় তার নামে নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়েছিল। ওই এলাকারই এক মেঘালয় পল্লী ব্যাঙ্ক-এর শাখায় নগদ জমা গদিতে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকী তাঁর স্বামী, 'নিখোঁজ স্ত্রী'র সন্ধান পেতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারও চালিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁকে পাওয়া যায় গত সোমবার, ২৮ জুন, ওই ব্যাঙ্কের ভিতরই, তালাবন্ধ অবস্থায়।
পূর্ব খাসি পাহাড়ের পুলিশ সুপার, সিলভেস্টার নংটঙ্গার জানিয়েছেন, তাঁরা এই বিষয়ে একটি মামলা করেছে। তবে ইসাবেলা মিরবো ব্যাঙ্ক লুটের পরিকল্পনা করেছিল কিনা, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি পুলিশ। তবে ব্যাঙ্ক কর্মীদের দাবি, ব্যাঙ্কের নগদ অক্ষুণ্ণ অবস্থাতেই পাওয়া গিয়েছে। খোয়া যায়নি অন্য কোনও সম্পদও। মিরবোর সঙ্গেও কোনও টাকা বা অন্য কোনও সম্পদ ছিল না। তবে ওই মহিলা যে লুট করার চেষ্টাই করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
তাঁদের, দাবি ওই মহিলা ব্যাঙ্কের স্ট্রংরুমের তালা ভাঙার চেষ্টা করেছিল। সিসিটিভিতে তা স্পষ্ট ধরা পড়েছে। সেই ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে ইসাবেলা হাতুড়ি এবং করাত-সহ বেশ কিছু সাধারণ যন্ত্রপাতি এবং একটি ব্যাগ নিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকেছিল। ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার ব্যাঙ্ক খোলার পর স্ট্রংরুমের গেট খুলতে গিয়ে না পেরে তারা কাঠের মিস্ত্রি ডেকেছিলেন। সে আসার পরই ওই হাতুড়ি-করাত উদ্ধার হয়েছিল। স্ট্রং রুমে লাগানো চারটি সিসিটিভি ক্যামেরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ব্যাঙ্ককর্মীদের দাবি, সম্ভবত, গত শুক্রবার ব্যাঙ্ক খোলা থাকাকালীনই সে সেখানে এসে, কোথাও লুকিয়ে ছিল। দিনের কাজ শেষ করে কর্মীরা ব্যাঙ্কে তালা লাগিয়ে চলে যাওয়ার পর, সে বেরিয়েছিল কাজ সাড়তে। সঙ্গে ছিল যন্ত্রপাতি এবং কিছু খাবার। সম্ভবত তার পরিকল্পনা ছিল, শনিবার ব্যাঙ্ক খোলার পর একসময় সুযোগ বুঝে সেখান থেকে সরে পড়ার। কিন্তু, গত শনিবার, অর্থাৎ ২৬ জুন ছিল মাসের চতুর্থ শনিবার। তাই ব্যাঙ্ক ছুটি ছিল। তার পরের দিন রবিবার তো ছুটি বটেই। চতুর্থ শনিবারের হিসাবটা মাথায় না রাখতে পারায় শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ইসাবেলা মিরবো ব্যাঙ্কেই আটকে ছিলেন। জোটেনি খাবার-দাবারও।
সোমবার ব্যাঙ্কের দরজার তালা খুলে সামনেই ইসাবেলাকে দেখতে পান কর্মীরা। তাকে দেখেই কর্মীরা বুঝতে পারেন, কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। সে পালাতে পারে এই ভয়ে কর্মীরা ফের তত্ক্ষণাত দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিস। সোমবার রাতে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিল সে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
চার সন্তানের মা মিরবো একটি ফাস্টফুড জয়েন্ট চালাতো। লকডাউনের সময় সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে তার হাতে আর কোনও কাজ ছিল না। সম্ভবত সেই কারণেই সে এই কাজ করতে গিয়েছিল।