গত কয়েক দশক ধরেই মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার রাজ্য সরকারগুলি।

মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দশক ধরেই মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার রাজ্য সরকারগুলি। কিন্তু মোদী সরকারের কঠোর পদক্ষেপ মাওবাদীদের হুমকিকে পুরোপুরি চূর্ণ করে দিয়েছে।

২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর অধীনে ইউপিএ সরকার মাওবাদী সমস্যাগুলি বুঝতে পেরেছিল। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইও শুরু করেছিল। কিন্তু ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান ও অপারেশন গ্রিনহান্ট চালু করেছিল। উন্নয়নের সঙ্গে নিরাপত্তার সমন্বয় রক্ষা করে করে এগিয়ে চলেছিল মনমোহন সিং-এর সরকার। পাশাপাশি সেই সরকার মওবাদীদের উদ্দেশ্যে এরটি আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে নরম কৌশল নিয়েছিল। নিরাপত্তা অভিযানও শুরু করেছিল। বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছিল। হিংসা ছেড়ে সাধারণ জীবনে ফেরার প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু তেমনভাবে সাফল্য আসেনি।

অন্যদিকে ২০১৪ সালে পরিস্থিতি বদলে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার মাওবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর লড়ই শুরু করে। সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রতি শূন্যসহনশীলতা নীতি গ্রহণ করে। অস্ত্র সমপর্ণ না করা পর্যন্ত আলোচনা নয়, তেমনই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে অপারেশন অক্টোপাস, অপারেশন প্রহারও যথেষ্ট সফল হয়। যাতে অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায় মাওবাদীদের আন্দোলন।

কিন্তু মোদী সরকারের মাওবাদীরে বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধুমাত্র বন্দুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নয়নকেও হাতিয়ার করেছে। একসময় মাওবাদীরা যেসব এলাকাকে বিচ্ছিন্ন ও আতঙ্কিত করে রেখেছিল সেই সব প্রত্যন্ত এলাকাতেও উন্নয়নের জোয়ার এনেছে। তাতে দুর্দান্ত ফলাফল পেয়েছে মোদী সরকার। মাওবাদী দমনে স্থানীয়দের সহযোগিতাও পেয়েছে মোদী সরকার।

পরিসংখ্যান বলছেন, মাওবাদী সম্পর্কিত হিংসা গত কয়েক বছরে প্রায় ৭৭ শতাংশ কমেছে। ইউপিএ আমলে হিংসার হার ছিল প্রায় ৮৫ শতাংশ। বিদ্রোহীদের কাছ থেকে জমি ফিরিয়ে এনে তা স্থানীয় মানুষদের মধ্যে বিলি করেছে মোদী সরকার।

এই কঠোর অবস্থান বিজেপির দীর্ঘদিনের মাওবাদী হিংসার প্রতি শূন্য সহনশীলতার নীতিকে প্রতিফলিত করে, যা বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। হায়দ্রাবাদের কিছু কর্মী অভিযান বন্ধের আহ্বান জানালেও, সরকার বুঝতে পারে যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমেই স্থায়ী শান্তি আসে। এবং মাওবাদীদের সাথে আলোচনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বান্দি সঞ্জয় কুমারও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সরকার তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে না যারা সহিংসতা বেছে নেয়, বন্দুক বহন করে এবং নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।