সংক্ষিপ্ত

মুম্বইয়ের নির্ভয়ার শরীর যে ভালো নেই, তা আগেই বলেছিল পুলিশ। যে নৃশংস অত্যাচার তাঁকে সইতে হয়েছে সেখান থেকে আর ফিরে আসতে পারলেন না তিনি। শনিবার সকালে মুম্বইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন নির্যাতিতা। 
 

জীবন মৃত্যুর টানাপোড়েনে আর লড়াইটা দিতে পারলেন না মুম্বইয়ের নির্ভয়া। মৃত্যুর কাছে তাঁকে হার মানতেই হল। পড়ে থাকল এক নৃশংস শারীরিক অত্যাচারের কাহিনি। যা শুধু মুম্বই বা ভারতবর্ষ নামে দেশের নয় সমগ্র মানব সমাজের পক্ষে এক চূড়ান্ত লজ্জা। ৯ সেপ্টেম্বর ৩০ বছর বয়সী এক যুবতীকে মুম্বইয়ের সাকিনারা এলারার খইরানি রোড থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর তাঁকে মুম্বই-এর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান যে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু যোনি এবং শরীর জুড়ে থাকা ক্ষতচিহ্ন এতটাই মারাত্মক ছিল যে চিকিৎসকদের পক্ষেও সঠিকভাবে অত্যাচারের একটা ছবি পুলিশের সামনে তুলে ধরতে অসুবিধা হচ্ছিল। পরে সামান্য জ্ঞান এলে ওই যুবতীর কাছ থেকে চিকিৎসকরা জানতে পারেন যে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং যোনি লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়েও পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল। 

উদ্ধারের পর ওই যুবতীর চিকিৎসা চলছিল, ঘাটকোপারের রাজাওয়াড়ি হাসপাতালে। সেখানেই খবর পেয়ে ছুটে এসেছিল মুম্বই পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। এরপর ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পায়। সেখান থেকেই পরিস্কার হয় যে ওই যুবতীর উপরে কোন মাত্রায় শারীরিক অত্যাচারের ছবিটা। এই সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ বছর ৪৫-এর এক লোককে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর এই ধ়ৃত ব্যক্তি আসলে এই ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারায় ধর্ষণ, ৩০৭ নম্বর ধারায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। সন্দেহ করা হচ্ছে এই ঘটনায় আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে। ধৃতকে জেরা করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। 

এদিকে, মুম্বই-এর নির্ভয়ার মৃত্যুর পরই টুইটারে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনীতি। বিজেপি-র প্রতি অনুরক্ত এবং সমর্থকরা সামনে এনেছেন হাথরসকাণ্ডকে। উত্তরপ্রদেশে হওয়া এই হাথরসকাণ্ড নিয়ে প্রবলভাবে সরব হয়েছিল কংগ্রেস। এমনকী রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরা উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কর্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তুলে প্রচুর হইচই করেছিলেন। তাহলে মুম্বই-এর ঘটনায় কেন এখন রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরা চুপ- সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।