সংক্ষিপ্ত

ফের বিতর্কিত গিরিরাজ সিং

৪৭ সালে পূর্বপুরুষরা ভুল করেছিলেন বলে দাবি করলেন

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গলায় জিন্না-তত্ত্বের পুনরাবৃত্তি

নাড্ডার বকাবকি কি বিফলে গেল

 

ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন গিরিরাজ সিং। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যাঁরা নিয়ম করে আপত্তিকর মন্তব্য করে থাকেন, তাঁদের মধ্যে কেন্দ্রীয় পশুপালন, দুগ্ধ ও মৎস্যমন্ত্রী মন্ত্রী অন্যতম। তাঁর সর্বশেষ মন্তব্য, ১৯৪৭ সালেই সব মুসলমানকে পাকিস্তানে পাঠানো উচিত ছিল।

বিহারের পূর্ণিয়ায় এক সবায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গিরিরাজ সিং বলেন, পূর্বপুরুষরা যে ভুল করেছিলেন, বর্তমান সময়ে তার মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। কী ভুল? তাঁর দাবি, ১৯৪৭ সালেই সব মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে, সেখান থেকে সব হিন্দুদের ভারতে নিয়ে আসা হত, তাহলে বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান-কে এই দ্বন্দ্বমূলক পরিস্থিতিতে থাকতে হত না। তাঁর সাফ কথা, 'ভারতবংশীয়'-রা যদি ভারতে আশ্রয় না পান, তবে তাঁরা কোথায় যাবেন?

আরও পড়ুন - গোমাংস-এর মোকাবিলায় গীতা, গিরিরাজের নিশানায় মিশনারি স্কুল, আইআইটি থেকে বিদেশ

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বা সিএএ বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলছে। আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের আগে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা শুধুমাত্র অমুসলিম শরণার্থীদেরই নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিরোধীরা সংবিধান লঙ্ঘনের প্রশ্ন তুলছে। তার মধ্যেই এইরকম আপত্তিকর সংবিধানবিরোধী মন্তব্য করলেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মুসলিম ও হিন্দুদের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের তত্ত্ব দিয়েছিলেন মহম্মদ আলি জিন্না। গিরিরাজ তারই পুনরাবৃত্তি করলেন।

আরও পড়ুন - কোলের শিশু-কে দাফন করে আন্দোলনে মা, সেই শাহিনবাগ-ই 'সুইসাইড বম্বারদের আতুরঘর'

গিরিরাজ সিং অবশ্য বহুবার মুসলমানরা যে তাঁর তীব্র অপছন্দের তা খোলামেলাই প্রকাশ করেছেন। বিজেপি-র পক্ষ থেকে তাঁর লাগাম টানার চেষ্টাও খুব কমই হয়েছে। দিন চারেক আগেই তাঁকে, উত্তরপ্রদেশের ইসলামী মাদ্রাসা দেওবন্দ একটি 'সন্ত্রাসবাদীদের মূল আখড়া' বলে মন্তব্য করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সবাপতি জে পি নাড্ডা। তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। তারপরেও তিনি যেরকম মন্তব্য করলেন, তাতে নাড্ডার বকাবকিতে খুব একটা কাজ হয়েছে বলে মনে করছে না সংশ্লিষ্ট মহল।

আরও পড়ুন - সুপ্রিম নির্দেশের ফাঁপরে ট্রাম্প, তাজ দর্শনে ভরসা ব্যাটারি গাড়ি

তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন উপর উপর ধমকানি আর তলায় তলায় চমকানি, এই নীতিতেই বিজেপি এখন চলবে। সিএএ আইন পাসের পর থেকে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জুনিয়র অর্থমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, এবং বিজেপির ছোট মেজো নেতারা একের পর এক উস্কানিমূলক আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। গিরিরাজ সিংহের এই সর্বশেষ মন্তব্যের জবাবে বাম নেতা কানহাইয়া কুমার বলেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাকিস্তানের প্রচারেই বেশি সময় ব্যয় করছেন। তাঁর ভিসামন্ত্রী হওয়া উচিত ছিল। বা তিনি লাহোরে একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি অফিস খুলতে পারতেন।