সংক্ষিপ্ত
অযোধ্যা-কাশি-মথুরার যুগপথে নৈমিষারণ্য; যোগী সরকারের দূরদর্শিতায় এক সমৃদ্ধ আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হলো
মনে করা হয় ভগবান বিষ্ণুর চক্রতীর্থ এবং বৈদিক শিক্ষার একটি পবিত্র জন্মস্থান নৈমিষারণ্য, যেখানে ৮৮,০০০ ঋষি তপস্যা করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার ধর্মীয় শহর যা লখনউ থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যা আজ যোগী সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলে আধ্যাত্মিক পবিত্রতা এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার মেলবন্ধনে এক অসাধারণ পবিত্র তীর্থস্থান, এবং বিশেষভাবে পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই তীর্থস্থানে আসেন, বিশেষ করে নবরাত্রী এবং ১৪ কোশী পরিক্রমা উপলক্ষে। ২০১৭ সালের তুলনায় নৈমিষারণ্যে আসা ভক্তের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
পরিসখ্যান : এবারের ৮৪তম কোশী পরিক্রমায় উপস্থিত তীর্থযাত্রীদের পরিসখ্যান তুলনা করলে দেখা যায় সংখ্যা ১.৫ লক্ষ থেকে বেড়ে প্রায় ৫ লক্ষে পৌঁছেছে। অমাবস্যায় চক্রতীর্থে পবিত্র স্নান করতে ভক্তের সংখ্যা ৫০,০০০ বা ১ লক্ষ থেকে বেড়ে ২ লক্ষেরও বেশি হয়েছে। মৌনী অমাবস্যায় দর্শনার্থীর সংখ্যা ১.৫ লক্ষ থেকে বেড়ে ৩ বা ৪ লক্ষে পৌঁছেছে। অন্যদিকে গুরু পূর্ণিমায় এখন ১ লক্ষের বদলে সংখ্যা বেড়ে ২ থেকে ৩ লক্ষ দর্শনার্থী উপস্থিতি নজরে আসে। ২০১৭ সালের বার্ষিক তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ১ কোটি থেকে বেড়ে এখন ২ কোটিরও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নৈমিষারণ্যের পরিকাঠামো, যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা, সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক আনন্দ বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দূরদর্শি পরিকল্পনা মন্দিরের প্রাচীন গৌরব ফিরিয়ে এনেছে। তিনি আরো বলেন, "ধর্মীয় পর্যটনে উত্তরপ্রদেশের অত্যন্ত তাৎপর্য রয়েছে এবং নৈমিষারণ্য সবচেয়ে পবিত্র তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি। ভক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে, আমরা তীর্থযাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা উন্নত করার জন্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলি সময়মত এবং উচ্চমানের সমাপ্তি নিশ্চিত করার দিকে মনোনিবেশ করছি,"।
উন্নয়নের দিকে নজর : উত্তর প্রদেশ রাজ্য নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড একটি বিশাল চক্রতীর্থ প্রবেশদ্বার এবং ৯৭২.৯২ লক্ষ মূল্যের করিডোর শৈলীর প্রবেশপথ তৈরী করছে। পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন ৭৯৩.৩১ লক্ষ ব্যয় করে তীর্থযাত্রীদের জন্য ডরমেটরি নির্মাণ করছে। যোগী সরকার মন্দিরের ৮৮,০০০ ঋষির তপোস্থলে আসা ভক্তদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। এমনকি হেলিপোর্টের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে, যার জন্য ৭৮১.৪১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ। সড়কপথ যোগাযোগের জন্য ২১৫ লক্ষ টাকা, ৩৮১.৪২ লক্ষ টাকা ঐতিহাসিক ধ্রুব কুণ্ডের সৌন্দর্যায়নের জন্য। নৈমিষারণ্য বিকাশ পরিষদ কর্তৃক সীতাপুর লিংক রোডে পার্কিং এবং পর্যটন অবকাঠামোর জন্য ৪,৭৬৩.০৮ লক্ষ টাকার প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে। অন্যদিকে মিসরিখের বার্তালের জঙ্গলীনাথ মন্দিরে পর্যটন উন্নয়নে ৯৬.৮৮ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ। চক্রতীর্থ কুণ্ড কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ২,২৭৭.৩০ লক্ষ টাকা এবং প্রবেশদ্বার প্লাজার জন্য ৯০৬.৬০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার, পর্যটনের সুব্যবস্থা, দক্ষিণ ভারতীয় ধাঁচের মন্দির নির্মাণ, দেশ বিদেশের ভক্তদের সাথে দক্ষিণী রাজ্যগুলি থেকেও আরও বেশি পরিমান ভক্তদের আকর্ষণ করতে সাহায্য করেছে। অযোধ্যা, কাশী এবং মথুরায় সাথে যোগাযোগ পথ মিলিত হয়ে নৈমিষারণ্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে বড়ো কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও তীর্থযাত্রীদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় হোটেল, হকার, ট্রাভেল এজেন্ট এবং ফুল বিক্রেতা সহ আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যোগী সরকারের দূরদর্শিতায় এক সমৃদ্ধ আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হলো নৈমিষারণ্য। অযোধ্যা, কাশী এবং মথুরার যুগপথেই দেখা মিলবে নৈমিষারণ্যের উন্নয়ন। ২০১৭ সালের পর থেকে তীর্থযাত্রীদের দ্বিগুনের বেশি আগমনে পর্যটন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে খুশি উত্তরপ্রদেশ। শরণার্থীদের জন্য ১৫০ কোটির প্রকল্পের অনুমোদন গ্রহণ।