সংক্ষিপ্ত

আমি সত্যিই অনুতপ্ত। ওঁদের জন্য আমি খুবই দুঃখিত। যারা নিজেদের কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, আশা করি কখনও এই যন্ত্রণা থেকে ওঁরা মুক্তি পাবে।

 

'সত্যিই অনুতপ্ত', ১৩ বছর পর জেলের বাইরে পা রেখে বললেন নলিণী। তিন দশকের কারাবাসের পর সেদিনের বিস্ফোরণের জন্য অনুতাপ শোনা গেল নলিণীর কন্ঠে। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, সেদিনের ঘটনার জন্য অনুতপ্ত তিনি। বিস্ফোরণে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁদের পরিবারের জন্যও দুঃখ প্রকাশ করলেন তিনি। নলিণী বললেন, 'এত বছর ধরে এটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। আমি সত্যিই অনুতপ্ত। ওঁদের জন্য আমি খুবই দুঃখিত। যারা নিজেদের কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, আশা করি কখনও এই যন্ত্রণা থেকে ওঁরা মুক্তি পাবে।

তবে মুক্তি পেয়ে আর এদেশে থাকবেন না নলিণী। জানিয়েছেন প্রথমেই ব্রিটেনে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে দেখা করবেন। সেখানেই থাকবেন। তাঁর সঙ্গেই যাবেন নলিণীর স্বামী তথা রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় আর এক অপরাধী মুরুগানও। প্রয়াত রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে চান কি না জানতে চাওয়ায় নলিণী স্পষ্ট জানান,'না, একদমই দেখা করতে চাই না।'

শুক্তবারই নলিনী শ্রীহরণ, রবিচন্দ্রন, শান্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমারের মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগেই গত মে মাসে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছেন এই মামলার আর এক সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালন। তার ছ'মাসের মাথায় বাকি সাতজনেরও মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শোনার পর নলিনীর কন্ঠে উঠে আসে,'আমি জঙ্গি নই।'

সময়টা ১৯৯১ সালের ২১ মে। তামিলনাড়ুর শ্রীপেরমবদুরে একটি নির্বাচনী সভায় যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সেই সভাতেই আত্মঘাতী বোমবিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। তদন্তে উঠে আসে শ্রীলঙ্কার বিদ্রোহী তামিল গোষ্ঠী এলটিটিই-র নাম। জানা যায় এই গোষ্ঠীর ধানু নামের এক মহিলা জঙ্গি নিজেকে বোমার সঙ্গে বেঁধে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হন সাতজন। নাম উঠে আসে নলিনী নামের এক মহিলারও। সাতজনেরই মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করা হয়। অবশেষে মৃত্যুদণ্ডের পরির্বতে যাবজ্জীন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

অন্যদিকে আদালতের রায়ের তীব্র বিরোধিতা করল কংগ্রেস। সোনিয়া গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধীতা করে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মানু সিংভি বলেন, 'আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে একটি জাতির সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও পরিচয় জড়িত।' তিনি আরও সংযোজন করেন, 'একটি জাতির সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বৃহত্তর ইস্যুটি কি বিবেচনায় করা হয়েছে?' অপর এক কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। দল এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছে।'

আরও পড়ুন - 

বন্দি দশায় তিন দশক পার, ৩১ বছর পর জেলের বাইরে পা রাখলেন নলিণী-সহ রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্তরা

মাঝ আকাশেই সংঘর্ষ, এয়ার শো চলাকালীন গুঁড়িয়ে গেল দুটি বিমান, ৬ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা

কোভিড -লকডাউন নিয়ে জিংপিং সরকারের সমালোচনায় সরব চিন, কিন্তু গ্রেফতারি এড়াতে নিল অন্য ব্যবস্থা