সংক্ষিপ্ত
এতদিন ছিল ফাঁসির ঠিক আগে প্রাণভিক্ষার আবেদন।
আরও নানান আইনি প্যাঁচ দিতে দেখা গিয়েছে।
এইবার নির্ভয়া কাণ্ডের আসামিরা ফাঁসি পিছিয়ে দিতে অন্য চাল দিল।
কারাগারে রক্তারক্তি বাধালো বিনয় শর্মা।
নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিরা ফাঁসি পিছিয়ে দিতে একের পর এক কৌশল অবলম্বন করছে। এবার এক নতুন চাল চালল চার আসামির অন্যতম বিনয় শর্মা। গত সোমবার কারাগারের দেয়ালে কপাল ঠুকে ঠুকে সে নিজেকে আহত করেছে বলে জানিয়েছে তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। তিহারের তিন নম্বর ব্যারাকে তাকে রাখা হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ নির্ভয়াকাণ্ডের আসামিদের উপর সবসময় নজর রাখছেন। তারমধ্যেই বিনয় নিজেকে আহত করতে সফল হয়। তবে, ওয়ার্ডেন-এর তৎপড়তায় তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিনয় কারাগারের দরাদে হাত জড়িয়ে হাত ভেঙে ফেলার চেষ্টাও করেছিল। বিনয়ের মা পরেরদিন ঘটনাটি জানান তাদের আইনজীবী এপি সিং-কে। এখন বিনয় তার মাকেও চিনতে অস্বীকার করেছে বলে জানা গিয়েছে। এপি সিং-এর দাবি নতুন মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর থেকেই বিনয়ের মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। নিজেকে আহত করা, মা-কে চিনতে অস্বীকার করার মতো ঘটনা উল্লেখ করে তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হিসাবে দেখানোর চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন - নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির নতুন দিন ঘোষণা, জল গড়ালো মার্চে
তবে কারাবিভাগের কর্মকর্তারা এই দাবি মানতে নারাজ। তারা জানিয়েছেন, বিনয়ের শরীর-স্বাস্থ্য একেবারে ঠিক রয়েছে। সাম্প্রতিক মনোবিজ্ঞান পরীক্ষায় তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কারাগারের ওয়ার্ডেন জানিয়েছেন ৩ মার্চের জন্য নতুন মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর থেকে কারারক্ষীদের প্রতি চার আসামির মনোভাব অত্যন্ত আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। তাদের আচরণ পাল্টে গিয়েছে। খাবার-দাবার আগের মতোই খাচ্ছে। বিনয় শর্মা এবং মুকেশ সিং প্রথমে খাওয়া প্রত্যাখ্যান করেছিল, কিন্তু অনেক বোঝানোর পর তারাও রাজি হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন - নির্ভয়া মামলার শুনানিতে সংজ্ঞা হারালেন বিচারক, খারিজ হল বিনয়ের আবেদন
কারা কর্তৃপক্ষের সন্দেহ মুকেশ, অক্ষয়, বিনয় এবং পবন- এই চার আসামিই আত্মহত্যা করার চেষ্টা করতে পারে। তার জন্য এই চারজনকে ২৪ ঘনটা চোখে চোখে রাখা হচ্ছে। তদারকির জন্য তাদের কক্ষে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরায় সবসময় নজর রাখছেন ওয়ার্ডেন। এছাড়াও, প্রতিটি কক্ষের বাইরে আলাদা করে রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। কারাগারের অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চারজনকেই অবশ্য তাদের পরিবারের লোকদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, আসামিরা অনেকসময়ই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করছে। তাদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরা মাঝে মাঝে হিংস্র আচরণ করতে দেখা যায়। তারা নিজেদের-কে আহত করে ফাঁসি আরও কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করতে চেষ্টা করে। কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যদি কোনও আসামি আহত হয় বা তার ওজন কমে যায়, তাহলে সে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত তার ফাঁসি কার্যকর করা স্থগিত হয়ে যেতে পারে।