সংক্ষিপ্ত
১৮ মাসের জন্য বন্ধ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন রাহুল, সেই পথেই হাঁটলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, ডিএ বন্ধের সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয় বললেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
করোনার আবহে দীর্ঘদিন ধরেই লকডাউন চলছে দেশজুড়ে। আর তাতেই দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি তলানিতে। এই অবস্থায় দেশের আর্থিক মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে কেন্দ্র। জেরে সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বর্ধিত ডিএ আপাতত দেড় বছরের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত দেড় বছরের বর্ধিত মহার্ঘ্যভাতা দেওয়া হবে না। আর সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা।
দেশে লকডাউন উঠলেও শিথিল হচ্ছে না কঠোর নিয়ম, ৩০ জুন পর্যন্ত করা যাবে না কোনও জনসমাবেশ
ভারতেও শুরু হচ্ছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, অক্টোবরের মধ্যেই বাজারে ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা
শিথিল হল লকডাউনের নিয়ম, দেশে খুলছে অত্যাবশ্যকীয় ছাড়াও সব দোকানপাট
বর্তমানে বেসিকের ওপর ১৭ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়। তা বাড়িয়ে গত মার্চে ২১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতির জেরে সেই বর্ধিত ডিএ ২০২১ এর জুলাই মাস পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় নামলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। দেশের এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারী ও সশস্ত্র বাহিনীকে অর্থকষ্টে ফেলার প্রয়োজন ছিল না বলেই মনে করেন প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, “এই পরিস্থিতির জন্য সরকারি কর্মচারি এবং সেনাবাহিনীর ওপর বোঝা চাপানোর কোনও দরকার ছিলনা। যাদের ডিএ কাটা হল, তাদের পাশা দাঁড়ানো উচিৎ।”
দুবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া ছাড়াও মনমোহন সিং একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। তাই দেশের এই অর্থনৈতিক সংকটে তাঁর বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর আগে মনমোহন সিং বলেছিলেন, ‘করোনা রুখতে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলিকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা উচিত। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-রাজ্য সমঝোতা খুবই জরুরি। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির পারস্পরিক সহযোগিতাই করোনা রোখার মূল চাবিকাঠি’।
বিজেপি সরকারের কেন্দ্রীয় সরকারি কমর্দীরে ডিএ-তে কোপ দেওয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বর্ধিত ডিএ স্থগিতের সিদ্ধান্তকে ‘অমানবিক’ ও ‘অসংবেদনশীল’ বলে অখ্যায়িত করেন তিনি। বুলেট ট্রেন বা সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের বদলে সরকারি অর্থ বাঁচিয়ে মধ্যবিত্ত ও পেনশনভোগীদের সুরাহায় কেন্দ্রের নজর দেওয়া উচিত বলে জানান রাহুল।
গত মাসেই কেন্দ্রীয় সরকার ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের জেরে ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২১ শতাংশ হত ডিএ। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে বিধ্বস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি কর্মীদের বেতনে কোপ দিতেই হয়েছে মোদী সরকারকে। কেন্দ্রকে অনুসরণ করে বিভিন্ন রাজ্য সরকারও সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের দের ডিএ বৃদ্ধি স্থগিত রাখতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে রাজ্যগুলি কমবেশি ৮২,৫৬৬ কোটি টাকা বাঁচাতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।