সংক্ষিপ্ত
২০২৩ সালে একাধিক যাত্রীর থেকে মূল্যবান সম্পত্তি চুরি করেছিল রাজেশ। শতাধিকবার বিমান সফরও করেছিল।
অবাককাণ্ড! বিমানেও চুরি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা গয়না। আর সেই চোরকে পাকড়াও করতে পেরে তদন্তকারীদের হাতে যা তথ্য এসেথে তাতে রীতিমত চোখ কপালে ওঠারই মত। গত এক বছরে ২০০ বার বিমান সফর করেছিল সেই চোর। ২০২৩ সালে একাধিক যাত্রীর থেকে মূল্যবান সম্পত্তি চুরি করেছিল। বিমানবন্দরে ডাকাতি করার জন্য ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে দেশের মধ্যেই হাজার হাজার কিলোমিটার সফর করেছিল। সেই আজব চুরির পর্দা ফাঁস করল দিল্লি পুলিশ।
হায়দ্রাবাদ থেকে দিল্লির যাত্রী এক মহিলা গত মাসেই অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর হল্যান্ড ব্যাগ থেকে ৭ লক্ষ টাকার গয়না চুরি হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক পর্যটকও তেমনই অভিযোগ করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন তাঁর কেবিন ব্যাগথেকে ২০ লক্ষ টাকার মূল্যবান জিনিস খোয়া গেছে। এই দুটি ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশ। প্রথমেই তারা খতিয়ে দেখে বিমানবন্দরের কয়েক ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ। সেখান থেকেই সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে রাজেশ কাপুর নামের এক ব্যক্তিকে। হায়দরাবাদ, অমৃতসর বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফু়টেজ স্ক্যান করার পরেও রাজেশ কাপুরকে দেখতে পেয়েছিল দিল্লি পুলিশ।
রাজেশকে দিল্লির পাহাজগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তকে ম্যারাথন জেরা করার পরই দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায় গোটা ঘটনা। রাজেশ জানিয়েছে, দেশের সবথেকে সুরক্ষিত এলাকাগুলির মধ্যে একটি হল বিমানবন্দর। সেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা বিমানবন্দরের মধ্যেই দিনের পর দিন ধরে অপরাধ করে গেছে। সেখান থেকে পালিয়ে যেতে পেরেছে।
Narendra Modi: 'মা গঙ্গা দত্তক নিয়েছেন', মনোনয়ন দাখিল করে বারাণসীতে শক্তি প্রদর্শন নরেন্দ্র মোদীর
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার উষা রঙ্গরানি বলেছেন, এই ব্যক্তি কানেক্টিং ফ্লাইটের যাত্রীদের লক্ষ্য করত। এপ্রিল মাসে হায়দ্রাবাদ থেকে দিল্লি যাওয়ার মহিলাকে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি সংযোগকারী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে চড়তে হয়েছিল। একইভাবে, মার্কিন বাসিন্দা, ভারজিন্দরজিৎ সিং, অমৃতসর থেকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে যাচ্ছিলেন এবং দিল্লি থেকে একটি সংযোগকারী ফ্লাইট ছিল।
ভোটের জেতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজার হাজার মিষ্টি বিলি কাজল শেখের, অনুব্রত বীরভূমে সবুজ আবিরে বিজয় মিছিল
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, রাজেশ বিমানবন্দরে থাকা যাত্রীদের মধ্যে থেকে বয়স্ক ও মহিলাদের টার্গেট করতেন। তিনি তাদের ফলো করত। তারপরই সুযোগ পেলে হাত সাফাইয়ের কাজে লেগে পড়ত। রাজেশ মূল্যবান সম্পদের তথ্য পেতে ব্যাগেজ ডিক্লারেশন স্লিপের তথ্য কৌশলে পড়েনিত। তারপরি শিকার ধরত। পুলিশ জানিয়েছে রাজেশকে অনেকসময়ই বো়ডিং গেটে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে।
প্লেনে ওঠার পর টার্গেটের পাশে বসার জন্য বিমান সংস্থাকে আসন পরিবর্তনের অনুরোধ জানাতেন। সেটি হয়ে গেলেই কেল্লাফতে। যেসব যাত্রীদের পাশে বসত, তাদের মালপত্রই চুরি করল রাজেশ। চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ, চণ্ডীগড়, ব্যাঙ্গালোর, মুম্বাই এবং অমৃতসরের মতো বিমানবন্দর থেকে বেশিরভাগ মহিলা যাত্রীদের ব্যাগ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেছিল। পাহাড়গঞ্জের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ সোনা ও রূপোর গয়না উদ্ধার হয়েছে। যে প্রতিবেশীর কাছে গয়না বিক্রি করত তার নামও বলেছে। রাজেশ রিকি ডিলাক্স নামে একটি গেস্টহাউস রয়েছে। এই বাড়িত তিন তলাতেই থাকত সে। একটি মোবাইলফোন মেরামতের দোকানও রয়েছে। টাকা এক্সচেঞ্জের ব্যবসাই ছিল তার।