Pahalgam Attack: গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। জঙ্গিরা ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করে। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও অধরা জঙ্গিরা।

Pahalgam Attack: গত মঙ্গলবার ছিল সেই ভয়ঙ্কর দিন। যেদিন জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত হন ২৬ জন পর্যটক। প্রতি বছর এই এপ্রিল-মে মাস নাগাদ ভিড় জমে ভূস্বর্গে। ভূস্বর্গের স্বাদ পেতে মোটা টাকা খরচ করেন অনেকেই। হাজার হাজার মানুষ এই কাশ্মীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজির হয়ে সেখানে। এবছরও তার অন্যথা হয়নি। এদিকে সদ্য সবেমাত্র সন্ত্রাসের (Terrorist) আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফিরছিল ভূস্বর্গ। সেই কারণে এবছর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শ্রীনগরের টিউলিপ গার্ডেন থেকে ডাললেক, সোনমার্গ - ছিল পর্যটকে ঠাসা। চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল পহেলগাঁও-তেও (Pahalgam)। আর এই সুযোগে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করল জঙ্গিরা। ২২ এপ্রিল দুপুরে পহেলগাঁও-তে জঙ্গি হামলা হয়। প্রয়াত হয় ২৬ জন হিন্দু।

আজ এক সপ্তাহ পার হল এই ঘটনার। তবে, এখনও অধরা জঙ্গিরা। এখনও চলছে চিরুনি তল্লাশি। তল্লাশি চলছে মধ্য ও দক্ষিণ কাশ্মীরের গ্রাম, পাহাড় এবং জঙ্গলে। সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বাড়ি দেখলে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে, পেহলগাঁও হামলার ১ সপ্তাহ পার করলেও আসল অপরাধীরা এখনও অধরা। এদিকে জঙ্গিদের তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল পাক সেনা। এখনও তা চলছে। কিন্তু হামলাকারীরা এখনও অধরা। গত বৃহস্পতিবার উধমপুরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তেহট্টের বাসিন্দা ভারতীয় সেনার প্যারাকমান্ডো ঝন্টু আলি শেখ।

মঙ্গলবার ভোরে ত্রালের অদূরে জঙ্গলে একটি জঙ্গিদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। তাদের সঙ্গে সেনা ও পুলিশের যৌথবাহিনীগুলো লড়াই শুরু করেছে। সেনা ও পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। সংঘর্ষ চলছে সোপিয়ান পুলওয়ামা এলাকাতেই। বৈসরনে হামলায় জড়িত সন্দেহে ১৫ জন স্থানীয়কে গ্রেফতার করে। তাদের বয়ান থেকে মিলছে তথ্য।

এদিকে এই পেহলগাঁও কাণ্ডে লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায়ী হবে অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে এখনও চলছে তদন্ত।

এদিকে জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল হামলার আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করেছিল। শেষ পর্যন্ত বেছে নেয় কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা। ২২ এপ্রিল দুপুরে ৫-৬ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করা হয়। তাতে মৃত্যু হয় ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন স্থানীয়ের। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকে।

কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা উপস্থিত ছিলেন কর্নাটকের একটি পরিবার। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথ রাওয়ের। জঙ্গিদের একজন মঞ্জুনাথ রাওয়ের স্ত্রী পল্লবীকে বলে ‘তোকে মারব না। যা মোদীকে গিয়ে বল।’

এই হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া মহিলা পর্যটক পুলিশকে জানিয়েছিল যে, ‘বন্ধুকধারীরা তার হাতে বিয়ের চুড়া দেখে তার কাছে আসে, সন্দেহ করে যে তারা হিন্দু।’ আবার একজন বলেন, তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর দেখে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়।

ঠিক এক সপ্তাহ আগে মঙ্গলবার পহেলগাঁও-তে (Pahalgam Attack) পর্যটকদের ওপর আক্রমণ করে জঙ্গিরা। ধর্ম জেনে বেছে বেছে হত্যা করা হয়। মূলত হিন্দুদের হত্যা করে জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে ২৬ জন পর্যটক প্রয়াত হন। সেই তালিকায় ছিল দুই জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশের নাগরিক আছেন। বলা হচ্ছে, যা ২০১৯ সালে পুলওয়ামার উপত্যাকার পর সবচেয়ে এটি মারাত্মক হামলা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন যে, জঙ্গিরা ধর্ম জেনে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করে। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে আগে তারাও দাবি করেছিলেন যে, পুরুষদের প্যান্ট খুলতে বলা হয়েছিল এবং তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য পুরুষদের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপর সেই বিষয় নিশ্চিত করল তদন্তকারী আধিকারিকরা। কারণ প্রায় ২০ জনের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করেছিল বলে দাবি করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেনা সদস্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ দল তদন্ত করে। তবে, এক সপ্তাহ পার করলেও আজও অধরা আসল জঙ্গিরা।