Pahalgam Attack: কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এর একটি ভাইরাল ভিডিওতে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে শিশুর পেছনে হাঁটতে দেখা গেছে। ভিডিওটির পরিবার নিশ্চিত করেছে যে, ওই দুই ব্যক্তিই জুনেইদ ও সুলেমান নামের জঙ্গি, যারা সম্ভবত এলাকাটি রেকি করছিল। 

Pahalgam Attack: সদ্য ভাইরাল হয়েছে পাঁচ ছয়েকের এক বাচ্চার রিলস। ভূস্বর্গের ভিডিও সেটি। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চার ঠিক পিছন থেকে হেঁটে যাচ্ছে সন্দেহভাজন ভঙ্গিরা। আগেই সামনে এসেছিল এই ভিডিও। এবার প্রকাশ্যে এল তাদের নাম। জুনেইদ ও সুলেমান শাহ নামের ওই দুই জঙ্গি। ভিডিওথে দেখা যাচ্ছে, এই জুই জঙ্গির শিশুটির পিছন থেকে হেঁটে যাচ্ছিল। বাচ্চার পিছন দিয়ে হেঁটে যাওয়া ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে মিল আছে ওই দুই জঙ্গির।

ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে পরিবারের কর্তা বলেন, ‘যখন জঙ্গিদের ছবি সামনে এল, তখন আমার দেখে মনে হচ্ছিল দুজনকে কোথাও যেন দেখেছি। তখন আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলি। আমার স্ত্রীও একই কথা বলল। তখন আমরা আমাদের মোবাইলে বেতাব সহ পেহলগাঁওতে তোলা সমস্ত ভিডিও ছবি চেক করতে থাকি। তখন দেখি, আমি আমার মেয়ের সঙ্গে রিলসের জন্য ভিডিও তুলি, তাতে দেখতে পাই, পিছন থেকে দুই জঙ্গিকে হেঁটে চলে যেতে দেখি। ওদের বড ল্যাঙ্গুয়েজ আর ছবি দেখে আমাদের নিশ্চিত মনে হচ্ছে ওরাই। হয়তো আগে থেকে এলাকা রেইকি করার জন্যই বেতাব ভ্যালিত ছিল।’

ভূস্বর্গের স্বাদ পেতে মোটা টাকা খরচ করতে দ্বিধা করেন না অনেকেই। সে কারণে প্রতি বছর এপ্রিম মে মাসে কাশ্মীরে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। হাজার হাজার মানুষ এই কাশ্মীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজির হয়ে থাকেন সেখানে। এবছরও হয়নি তার অন্যথা। এদিকে সদ্য সবেমাত্র সন্ত্রাসের আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফিরছিল ভূস্বর্গ। ফলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শ্রীনগরের টিউলিপ গার্ডেন থেকে ডাললেক, সোনমার্গ - ভর্তি ছিল পর্যটকদের। ভিড় ছিল পহেলগাঁও-তেও। সেই ভিড়ের মাঝেই ঘটল দুর্ঘটনা। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-তে জঙ্গি হামলা হয়। প্রয়াত হয় ২৬ জন।

এদিকে জানা গিয়েছে, হামলার আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করে শেষ পর্যন্ত বেছে নেয় কাশ্মীরের বৈসারন ভ্যালি। সেদিন দুপুরে ৬-৭ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচেয় দেখে টার্গেট করে। তাতে মৃত্যু হয় ২৬ জনের। হাসপাতালে ভর্তি হন আরও অনেকে। বর্তমানে তারা সকলেই সুস্থ বলে জানা গিয়েছে। 

সেদিন কর্নাটকের একটি পরিবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথ রাওয়ের। জঙ্গিদের একজন পল্লবীকে বলে ‘তোকে মারব না। যা মোদীকে গিয়ে বল।’

এই হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া মহিলা পর্যটক পুলিশকে জানিয়েছিল যে, বন্ধুকধারীরা তার হাতে বিয়ের চুড়া দেখে তার কাছে আসে, সন্দেহ করে যে তারা হিন্দু। আবার একজন বলেন, তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর দেখে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়।

 প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার পহেলগাঁও-তে পর্যটকদের ওপর আক্রমণ করে জঙ্গিরা। ধর্ম জেনে বেছে বেছে হত্যা করা হয়। মূলত হিন্দুদের হত্যা করে জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে ২৬ জন পর্যটক প্রয়াত হন। সেই তালিকায় ছিল দুই জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশ নাগরিক সহ ২৬ জন নিহত হন। যা ২০১৯ সালে পুলওয়ামার উপত্যাকার পর সবচেয়ে এটি মারাত্মক হামলা। প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন যে, জঙ্গিরা ধর্ম জেনে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে আগে তারাও দাবি করেছিলেন যে, পুরুষদের প্যান্ট খুলতে বলা হয়েছিল এবং তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য পুরুষদের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করা হয়েছিল। সদ্য সেই বিষয় নিশ্চিত করল তদন্তকারী আধিকারিকরা। কারণ প্রায় ২০ জনের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করেছিল বলে জানা গিয়েছে। 

এদিকে সেনা সদস্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ দল বিশ্বাস করে যে, হত্যা করার আগে তাদের ধর্মের বিষয় নিশ্চিত হতে এই কাজ করা হয়েছিল। সদ্য তাদের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য।