Pahalgam Attack:পেহলগাঁও হামলার পর কাশ্মীরে সেনা অভিযানে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার তদন্তে জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Pahalgam Attack: পেহলগাঁও হামলার আবহে কাশ্মীরে বড় সাফল্য সেনাদের। নাকা চেকিং-র সময় গ্রেফতার হল ২ দন। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ। সূত্রের খবর, ধৃতরা জঙ্গিদের সহযোগী। জম্মু ও কাশ্মীরের বদগাম জেলা থেকে তাদের পাকড়াও করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে পিস্তল, গ্রেনেড সহ ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে সেনা। নির্দিষ্ট ধারারয় মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ আছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না তা নিয়ে চলছে তদন্ত।
পেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে জড়িত জঙ্গিদের খোঁজ করতে কাশ্মীরজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা। দুদিন আগে রাজস্থানের দুজন পাক চরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পঞ্জাব সামীন্তে কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করার সময় এক পাক নাগরিককে গ্রেফতার করেছিল বিএসঅফ। পরে পঞ্জাব পুলিশে হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে কাশ্মীরে জঙ্গিদের দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করল সেনা।
প্রসঙ্গত,প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ঘটেছিল সেই ভয়ানক ঘটনা। ঘটনাটি ঘটে পেহলগাঁও-র বৈসরন উপত্যকায়। যা মিনি সুইৎজারল্যান্ড নামে খ্যাত। সেদিন পর্যটকদের রক্ত লাল হয়ে যায় মিনি সুইৎজারল্যান্ড। যেদিন দুপুরে জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত হন ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেছিলেন যে, ‘জঙ্গিরা ধর্ম জেনে হত্যা করা হয়। বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করেছে।’

এই পেহলগাঁও কাণ্ডে লস্কর ই তৈবা-র ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায়ি বলে অভিযোগ ওঠে। সেদিন থেকে চলছে তদন্ত। তদন্ত করছেন সেনা সদস্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে।
এদিকে জানা গিয়েছিল, এই হত্যার ছক কদিন ধরে করা হয়। ২২ এপ্রিল হামলার ঠিক আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করেছিল জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছিল কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা। ২২ এপ্রিল দুপুরে ৫-৬ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়েছিল। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। ঘটনাস্থলে সেদিন মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন স্থানীয়ের।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে দাবি করেছিলেন যে, ‘পুরুষদের প্যান্ট খুলতে বলা হয়েছিল এবং তারা হিন্দু কিনা সে বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য। পুরুষদের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করেছিল জঙ্গিরা।’ তারপর এই বিষয় নিশ্চিত করে গুলি করা হয়। পরে এই বিষয়টি সঠিক বলে দাবি করেন তদন্তকারী আধিকারিকরাও। কারণ প্রায় ২০ জনের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করেছিল, আর সে কারণে এই ঘটনা নিশ্চিত বলে দাবি করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

এই প্রয়াতের তালিকায় আছেন শুভম দ্বিবেদী। শুভম দ্বিবেদীর স্ত্রী ঐশ্বন্য দ্বিবেদীর কথায় এখন শুধুই আতঙ্ক। আর একের পর এক সন্দেহ। তিনি দাবি করেছেন, সন্ত্রাসবাদীরা সঙ্গে করে একে ৪৭ নিয়ে আসেনি। বরং সেখানে কেউ তাদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিল বৈসরন উপত্যকাতেই।
তিনি এক নিউজ চ্যানেলকে জানান, ‘বৈসরনে ওঠার আগেই শুভ ঘোড়ার মিলাককে জিজ্ঞাসা করেছিল সেখানে নেটওয়ার্ক আছে কি না। তখন ঘোড়ার সহিস বলেছিলেন পুরো নেটওয়ার্ক আছে।’ এখন ঐশ্বন্যার মনে হচ্ছে, যদি একবার সে বলত, নেটওয়ার্ক নেই তাহলে যেতেন না তারা। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা না হওয়া পর্যন্ত কাশ্মীরে তারা নিরাপদ ছিলেন। মনে সন্দেহের দানা বাঁধেনি। চারপাশে এত পর্যটক। এত ভিড়। এর মধ্য যে তলায় তলায় চক্রান্ত চলছিল কে বুঝবে। তিনি আরও বলেন, আমরা একটু একটু দূরত্বে ভারতীয় সেনার জওয়ানদের দেখতে পাচ্ছিলাম ওপরে ওঠার সময়। তাই আমারা আশেপাশের মানুষদের কথাতেও সন্দেহ করিনি। এখন আমার মে পড়ছে, তাদের কথার মধ্যে সন্দেহজনক অনেক কিছু ছিল। তারা জিগ্যেস করছিল কারা কারা সঙ্গে এসেছে। জোড়ায় জোড়ায় চলতে বলেছিল।’
তিনি আরও দাবি করেছেন যে, ‘হামলাকারীরা সাধারণ জিন্স পরে ছিল। তাদের কাছে কোনও অস্ত্র ছিল না। তাদের অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল ওখানেই। সেখানেই যারা শুটিং, শাল বিক্রি করেছিল, সম্ভবত তারাই সরবরাহ করেছে।’


