সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানের সীমা হায়দারের প্রেমিককে টানা ৬ ঘণ্টা জেরা করল পুলিশ। জেরা করা হয়েছে তার বাবাকেও। অজ্ঞান স্থানে জেরা করা হয়।

 

একেই বোধহয় বলে প্রেমের গুঁতো! কারণ পাকিস্তানের সীমা হায়দারের প্রেমিক শচীন মিনা মঙ্গলবার টানা ৬ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। রেহাই পায়নি শচীন মীনার বয়স্ক বাবাও। নয়ডার একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যদিও উত্তর প্রদেশের একটি আদালত শচীন মিনা আর তার প্রেমিকা সীমা হায়দারকে জামিন গিয়েছিল। আদালতের শর্ত ছিল পুলিশকে না জানিয়ে সীমা যেন নয়ডা ছেড়ে কোথাও না যায়। ভারত ছাড়ার আগেও পুলিশকে জানাতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পাশাপাশি সীমা ও শচীন যদি ঠিকানা পরিবর্তন করে তাহলে তাদেরও আদালতকে জানাতে হবে। তবে এদিন কী নিয়ে শচীন মিনা ও তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তা নিয়ে কোনও কিছুই জানায়নি তাদের পরিবার।

সীমা বর্তমানে শচীনের ঘরনী হিসেবেই নয়ডায় রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে তার চার সন্তান। সীমা এই দেশে আসার পর সিঁদুর পরছে। সেই ছবিও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সঙ্গে রয়েছে তার সন্তানরা। শচীনের সঙ্গেও সীমার সন্তানদের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।

৩০ বছরের সীমা গোলাম হায়দার পাবজি খেলতে গিয়ে প্রেমে পড়েন শচীন মীনার। প্রেমের টামে প্রেমিককে একবার নিজের চোখে দেখতে আর কাছে পেতে সীমান্ত অতিক্রম করেন অবৈধভাবে। তিনি নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সীমা হায়দার গ্রেটার নয়ডার রাবুপুরা এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে শচীন মীনার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। চার মাস পরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। নেপাল থেকে ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশ করার জন্য গত ৪ জুলাই পুলিশ গ্রেফতার করে সীমাতে। তাঁকে সাহাস্য করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল শচীনকেও। আদালত দুজনকেই জামিন দিয়েছে। যদিও সীমা জানিয়েছেন তিনি পাকিস্তানে গুপ্তচর নন। তিনি শচীনের প্রেমে পড়েই ভারতে এসেছেন। তাঁর সংসার ছেড়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি যদি গুপ্তচর হতেন তাহলে সন্তান নিয়ে কখনই সীমান্ত অতিক্রম করতেন না। তিনি আরও বলেছেন নিজের সন্তানদের জীবন কখনই কোনও মা ঝুঁকিতে ফেলে না।

অন্যদিকে সীমার স্বামী গোলাম হায়দার পাকিস্তান থেকেই স্ত্রী ও সন্তানদের ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ তাঁর স্ত্রীকে পাবজি খেলার মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে। গোটাটাই শচীন মীনার কারসাজি বলেও অভিযোগ তাঁর। তবে সীমার বন্ধু ও আত্মীয়রা জানিয়েছেন তারা কখনই চান না যে সীমা আবার পাকিস্তানে ফিরে যাক। সীমা এখন মুসলিম নয় বলও দাবি আত্মীয়দের। তারা শুধু সীমার সন্তানদের ফেরত চাইছে।

অন্যদিকে এই দিনই সীমা হায়দারকে হুমকি দিয়েছে হিন্দু ডানপন্থী সংগঠন গোরক্ষা বাহিনী। সীমা হায়দারকে দেশ ছাড়ার জন্য মাত্র ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে উত্তর প্রদেশের গৌরক্ষা হিন্দু দল। সংগঠনের সভাপতি বেদ নদর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সীমা হায়দার পাকিস্তানের বাসিন্দা। তিনি একজন পাক গুপ্তচরও হতে পারেন। তাই তাঁর দেশে থাকা এই দেশের কাছে মোটেও নিরাপদ নয়। গোটা দেশের কাছেই হুমকির সামিল। তাই দ্রুত তাঁকে ভারত ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, 'আমরা বিশ্বাসঘাতক জাতির একজন নারিকে কখনই সহ্য করব না। যদি সীমা হায়দার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ত্যাগ না করে তাহলে আমরা একটি আন্দোলন শুরু করব।'