সংক্ষিপ্ত

প্রথমে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইডির হাতে গ্রেফতারি, তার রেশ কাটতে না কাটতেই বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারিতে বেকায়দায় তৃণমূল। পবন বর্মার পদত্যাগের সঙ্গে এই ঘটনাবলির কোনও যোগ রয়েছে কী, সে নিয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি।

গত বছরের নভেম্বর মাসে তৃণমূলে যোগ দেন হিন্দি বলয়ের তিন নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি আজাদ, অশোক তনওয়ার এবং পবন বর্মা। তবে সুসময় বেশিদিন টিঁকল না। সময় যে খুব একটা ভালো চলছে না ঘাসফুল শিবিরের, তা বলাই বাহুল্য। দুই নেতার শ্রীঘরে ঢোকার পর এবার আরেক ধাক্কা মমতা দলের। দলত্যাগের ঘোষণা করলেন পবন বর্মা। বৃহস্পতিবার টুইট করে তিনি তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। মাত্র ন’মাসের মধ্যেই ‘মোহভঙ্গ’ হল বিহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা অবসরপ্রাপ্ত আইএফএস অফিসার পবন বর্মার।

প্রথমে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইডির হাতে গ্রেফতারি, তার রেশ কাটতে না কাটতেই বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারিতে বেকায়দায় তৃণমূল। পবন বর্মার পদত্যাগের সঙ্গে এই ঘটনাবলির কোনও যোগ রয়েছে কী, সে নিয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি। টুইট করে মমতার থেকে বিদায় চেয়েছেন তিনি। সেখানে লিখেছেন দয়া করে যেন তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। এই দলে যে ভালবাসা পেয়েছেন তিনি, তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন পবন বর্মা। 

উল্লেখ্য তৃণমূলে পবন এসেছিলেন রাজনৈতিক কৌঁশলি প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরে।  সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ইস্তক তিনি ভোটকুশলী পিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবেই পরিচিত। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতা দখলের পর নভেম্বর মাসে দিল্লি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই সময় পিকের উদ্যোগেই প্রাক্তন জেডি(ইউ) সাংসদ পবন বর্মা তৃণমূলে এসেছিলেন।

জেডি(ইউ)-তে যোগদানের পরে ২০১৪ সালে বিহার থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন পবন। এক সময় পিকের সঙ্গেই তিনি নীতীশ কুমারের পরামর্শদাতা দলের সদস্যও ছিলেন। নীতীশের বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং সং‌শোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতা করে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি জেডি(ইউ) থেকে বহিষ্কৃত হন পিকে। সে দিন পিকের সঙ্গে নীতীশ বহিষ্কার করেছিলেন পবনকেও।

তবে একটি বিষয় ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। নীতিশ কুমার বিজেপির সঙ্গ ত্যাগের পরেই তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত জেডিইুয়ের প্রাক্তনীর। তাহলে কি ফের পুরোনো দলেই নতুন করে দেখা যাবে তাঁকে। আপাতত রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে মুখ খোলেননি পবন বর্মা। পবনের সঙ্গেই দুই প্রাক্তন সাংসদ, হরিয়ানার অশোক তনওয়ার এবং বিহারের কীর্তি আজাদও সেই সময় মমতার উপস্থিতিতে কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। গত এপ্রিলে তৃণমূল ছেড়ে অরবিন্দ কেজরীবালের উপস্থিতিতে আম আদমি পার্টি (আপ)-তে যোগ দেন অশোক।