Himachal Pradesh Flood News: মাঝরাতে হড়পা বানে চোখের সামনে সব শেষ। পোষ্য কুকুরই বাঁচিয়ে দিলো ৬৭টি প্রাণ। কীভাবে? বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…
Himachal Pradesh Flood News: মধ্যরাতে হঠাৎই কুকুরের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় নরেন্দ্রর। রাত তখন ১১ টা। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। তবে এসবের মাঝেই কুকুরের ডাক ক্রমেই কেমন যেন সন্দেহজনক হয়ে উঠছিল। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় কুকুরটিকে চুপ করাতে তিনতলা থেকে নীচে নেমে এসেছিলেন নরেন্দ্র। ঠিক সেই সময়ই হঠাৎ তিনি ঘড়ঘড় করে কিছু এগিয়ে আসার শব্দ পান।
তার পরই বাড়ির দেওয়ালে চোখ পড়তেই আঁতকে ওঠেন। দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। আর সেই ফাটল ক্রমে চওড়া হচ্ছে। বাড়ির সকলকে জাগিয়ে তুলে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসেন। কীসের শব্দ তা বুঝতে নরেন্দ্রর খুব বেশি সময় লাগেনি। কয়েক সেকেন্ডেই বুঝতে পারেন, ভয়াবহ বিপদ আসতে চলেছে । তার পরই চিৎকার করে গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের জাগিয়ে তোলেন।
নরেন্দ্র জানিয়েছেন, কুকুরটিও তার পিছু পিছু যাচ্ছিল। আর সমানে ডেকে চলেছিল। গ্রামে মোট ২০টি পরিবার। নরেন্দ্রর চিৎকার শুনে এক এক করে সকলেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। নরেন্দ্র সকলকে জানান, পাহাড় থেকে কিছু নেমে আসছে। দ্রুত অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। তার পরই সকলে মিলে একটি উঁচু মন্দিরে আশ্রয় নেন। তাঁরা আশ্রয় নেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিশাল জলরাশি আর পাথর নিয়ে পাহাড় থেকে হড়পা বান নেমে এসে। একের পর এক বাড়ি চোখের সামনে গুঁড়িয়ে যেতে শুরু করল। ভেসে গেল বেশ কয়েকটি বাড়ি।
সেই সময় নিজেদের হাতে তিল তিল করে গড়ে তোলা বাড়়ি হড়পা বানের সঙ্গে মিশে যেতে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলেন না বাসিন্দারা। এমনই জানিয়েছেন নরেন্দ্র। অনেকে সেই দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটি, দু'টি বাড়ির ভগ্নাবশেষ ছাড়া গোটা গ্রামটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, ওখানে যে তাঁদের একটি গ্রাম ছিল, কয়েকটি পরিবারের বাস ছিল, তা বুঝে ওঠা দায়। হড়পা বান গিলে খেয়েছে গোটা গ্রামটিকে।
জানা গিয়েছে, গত ৩০ জুন ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচলের মান্ডির ধরমপুর এলাকার সিয়াথি গ্রামে। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, কুকুরটি যদি না চিৎকার করত, তা হলে ২০টি পরিবারের ৬৭ জনেরই মৃত্যু হত। কিন্তু কুকুরের চিৎকারই তাঁদের প্রাণ বাঁচাল। নরেন্দ্রদের ঠিকানা এখন একটি মন্দির। সেখানেই গত এক সপ্তাহ ধরে রয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, হিমাচল প্রদেশের বন্যা পরিস্থিতির জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি জেলা। সবচেয়ে বেশি মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান হয়েছে এই জেলাতেই। গত ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচলে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ অনেকে। চলছে যুদ্ধ গতিতে উদ্ধার অভিযান। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


