সংক্ষিপ্ত
নাড়ু গোপালকে অনেকেই নিজের সন্তানের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। তাঁকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, তাঁর সাধ পূরণ করা সবই করে থাকেন অনেকেই। আর সেই সন্তানের যদি হাত ভেঙে যায় তাহলে বাবা-মায়ের মন খারাপ হবে না!
সারাদিনে বিভিন্ন ধরনের রোগীর (Patient) সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় চিকিৎসকদের (Doctor)। তাঁদের এক একজনের মানসিকতা এক এক ধরনের হয়ে থাকে। কিন্তু, ঠান্ডা মাথায় সব পরিস্থিতির সামাল দিতে হয় তাঁদের। তবে সাক্ষাৎ ভগবানের (God) চিকিৎসা (Treatment) কোনও চিকিৎসক করেছেন বলে শোনা যায়নি। সম্প্রতি রোগীর পরিবারের আর্জিতে সাক্ষাৎ কেষ্ট ঠাকুরের চিকিৎসা করতে হল আগ্রার (Agra) এক চিকিৎসককে।
নাড়ু গোপালকে (Naru Gopal) অনেকেই নিজের সন্তানের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। তাঁকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, তাঁর সাধ পূরণ করা সবই করে থাকেন অনেকেই। আর সেই সন্তানের (Children) যদি হাত ভেঙে যায় তাহলে বাবা-মায়ের (parent) মন খারাপ হবে না! সব থেকে বড় বিষয় হল সন্তানের শরীরে (Child Health) যদি কিছু হয় তাহলে তো বাবা-মা তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছেই যান। আর সেই একইভাবে নিজের সন্তানসম গোপালের হাত ভেঙে যাওয়ার পর কাঁদতে কাঁদতে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যান আগ্রার এক পুরোহিত (Priest)।
আরও পড়ুন- আপনার প্রিয় ফুচকা খেয়েও ঝরাতে পারেন মেদ, মাথায় রাখুন কয়েকটি বিষয়
কিন্তু, কীভাবে ভাঙল নাড়ু গোপালের হাত? আসলে নিজের সন্তানের মতোই গোপালের যত্ন করেন ওই ব্যক্তি। প্রতিদিনের মতো গোপালকে স্নান (Bath) করিয়ে দিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই কোনওভাবে তাঁর হাত ফসকে মাটিতে পড়ে যায় গোপালের মূর্তিটি (Krishna idol)। ভেঙে যায় হাত। এদিকে ছেলের হাত ভেঙে যাওয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কী করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না। তখনই গোপালকে কাপড়ে মুড়ে নিয়ে সটান চলে যান আগ্রার এক জেলা হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে নাড়ু গোপালের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিতে অনুরোধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন- ভয়-ডর একদম নেই, হাতে ব্যান্ডেজ নিয়েই হাসপাতালের বেডে দাঁড়িয়ে গলা খুলে গান একরত্তির
এদিকে মূর্তির হাত জুড়ে দিতে হবে একথা শোনার পরই অবাক হয়ে যান চিকিৎসক। মানুষের হাত তিনি জোড়া লাগিয়েছেন। কিন্তু, স্বয়ং ভগবানের হাত তিনি কীভাবে জোড়া লাগাবেন তা ভেবে পাচ্ছিলেন না। ওদিকে আবাক পুরোহিতের কান্নাও থামছিল না। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। তারপর পুরোহিতের কান্না দেখে খানিক বাধ্য হয়েই সযত্নে নাড়ু গোপালের হাতে ব্যান্ডেজ করে দেন তিনি। এমনকী, হাসপাতালের রেজিস্টারে রোগীর নাম হিসেবে লেখা হয়েছে 'শ্রী কৃষ্ণ'। শেষ পর্যন্ত গোপালের ভাঙা হাতে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ায় খুশি ন ওই পুরোহিত। আর তাকে নিয়েই বাড়ি ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন- প্রিয় খাবারের তালিকায় ফুচকার নাম নিশ্চয়ই রয়েছে, জানেন কি এই খাবারকে ইংরেজিতে কি বলে
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেখানে ওই পুরোহিতকে কোলে গোপালের মূর্তি নিয়ে কাঁদতে দেখা গিয়েছে। ততক্ষণে অবশ্য নাড়ু গোপালের হাতে ব্যান্ডেজ সম্পন্ন হয়েছিল। নেটিজেনদের অনেকেই বলছেন, মানুষের হাত ভাঙলে তাঁরা তো চিকিৎসকের কাছেই যান। তাই সেই ভরসাতেই গোপাল ঠাকুরকে নিয়েও হাসপাতালেই গিয়েছিলেন পুরোহিত। কৃষ্ণ ঠাকুরের বাল্যকালের অবতার হল গোপাল। তিনি নাকি বড় অভিমানী। তাই যাঁরা গোপালের সেবা করেন, তাঁদের বেশ সজাগ থাকতে হয়। সব সময় গোপালের খেয়াল রাখতে হয় তাঁদের। দেখতে হয় যাতে না তাঁর কোনও অযত্ন হয়। কারণ শিশুর মতো সব সময় তাঁর খেয়াল রাখলেই। না হলেই তাঁর নাকি অভিমান হয়ে যায়। এই বিষয়গুলি অবশ্য লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে। আর সেই বিশ্বাসেই বিশ্বাসী এই পুরোহিতও। তাই তো গোপালের ভাঙা হাত জোড়া লাগাতে সোজা হাসপাতালে গিয়ে উপস্থিত হন তিনি। প্রবাদে বলে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর!