সংক্ষিপ্ত
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও-এর অধীন তিন বিচারপচির বেঞ্চ যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষার জন্য ৬টি নির্দেশ জারি করেছে।
যৌনকর্মীদের সম্মিত দেওয়া দেহ ব্যববসাকে বৈধ পেশা হিসেবে সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যুগান্তকারী নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিপবার সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশে বলেছে যৌনকর্মীদের সম্মতি দেওযার বিরুদ্ধে পুলিশ হস্পক্ষেপ করতে পারে না। পাশাপাশি বলেছে পুলিশের ফৌজদারী ব্যবস্থা নেওয়াও উচিৎ নয়। এতে বলা হয় পতিতাবৃত্তি একটি পেশা । যৌনকর্মীরা আইনের অধীনে মর্যাদা ও সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও-এর অধীন তিন বিচারপচির বেঞ্চ যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষার জন্য ৬টি নির্দেশ জারি করেছে। বেঞ্চ বলেছে, যৌনকর্মীরা আইনের সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। ফৌজদারি আইন অবশ্যই বয়স ও সম্মতির ভিত্তিতে সকল ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। যখন এটা স্পষ্ট যে যৌনকর্মীদের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও সম্মতিতে অংশ গ্রহণ করেছে তখন পুলিশ অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পাশাপাশি অপরাধমূলক ব্যবস্থাও নিতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, পেশা যাই হোক না কেন সংবিধানের ২১ ধারা অনুযায়ী এদেশের প্রত্যেক নাগরিকের একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকার রয়েছে।
বেঞ্চ আরও নির্দেশ দিয়েছে, যৌনকর্মীদের গ্রেফতার করা, শাস্তি দেওয়া বা হয়রানি করার পাশাপাশি পতিতালয়েও অভিযান চালানো উচিৎ নয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আইন অনুযায়ী স্বেচ্ছ্বায় যৌনকর্ম এই দেশে বেআইনি নয়। শুধুমাত্র পতিতালয় চালান বেআইনি।
সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর বেঞ্চ নির্দেশে আরও বলেছে, যখন এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে যৌনকর্মী একজন প্রাপ্ত বয়স্ক, সম্মতিক্রমেই যৌনকর্মে অংশ নিয়েছে তখন পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পাশাপাশি এই যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলত ব্যবস্থাও নিতে পারবে না। একজন যৌনকর্মীর সন্তানকে শুধুমাত্র এই কারণে মা-এর থেকে আলাদা করা উচিৎ নয় যে সে যৌনব্য়বসায় জড়িত। মানুষের শালীনতা ও মর্যাদার মৌলিক সুরক্ষা যৌনকর্মী ও তাদের শিশুদের জন্য প্রসারিত। আদালত পুলিশকে আরও নির্দেশ দিয়েছে, যদি কোনও যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাহলে তাতে যোন কোনও প্রকার বৈষম্য না থাকে। যৌনকর্মীরাও যৌন-প্রকৃতির অপরাধের অভিযোগ জানাতে পারবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যৌনকর্মীরা যৌন নিপীড়নের শিকার - এই অভিযোগ তুললে তাদের মেডিক্যাল কেয়ারের প্রতিটি সুবিধে প্রদান করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষ হল, 'এটা লক্ষ্য করা গেছে যে যৌনকর্মীদের প্রতি পুলিশের মনোভাব প্রায়ই নৃশংস ও হিংসাত্মক হয়। যৌনকর্মীদের এমন একটি শ্রেণীর বলে মনে করা হয় যাদের কোনও অধিকার স্বীকৃত নয়।' এজাতীয় ব্যবহার না করে আদলত যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে সংবেদনশীলতার আহ্বান জানিয়েছে। আদলত বলেছে, গ্রেফতার, অভিযান, উদ্ধার অভিযানের সময় যৌনকর্মীদের পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না পুলিশ। যৌনকর্মীদের ছবিও প্রকাশ ও টেলিকাস্ট করা যাবে না।
শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, যৌনকর্মীদের দ্বারা অপরাধের প্রমাণ হিসেবে পুলিশ কখনই কন্ডোমের ব্যবহার বোধাতে পারবে না। আদালত আরও বলেছে, যেসব যৌনকর্মীদের উদ্ধার করে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হবে। অভিযুক্ত যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তাদের ২-৩ বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠান যেতে পারে। অন্তবর্তীসময় যৌনকর্মীদের বাড়িতে রাখা যেতে পারে। ম্যাজিস্ট্রেট যদি সিদ্ধান্ত নেন যৌনকর্মীদের সম্মতিতে যৌনকর্ম সংঘটিত হয়েছে তাহলে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। বিচারপতি রাও আরও বলেছেন, যৌনকর্মীদের তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সংশোধন বা শেল্টার হোমে জোর করে রাখা যাবে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৭ জুলাই।