সংক্ষিপ্ত
কুচকাওয়াজে ২৪ হাজারের সংখ্যা কমিয়ে এক ধাক্কায় ৫ হাজার থেকে ৮ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। ১৫ বছরের নীচে কোনও শিশুকে এই কুচকাওয়াজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয় নি।
বিগত দুই বছরে করোনার (Covid 19) দাপটে বদলেছে অনেক নিয়ম, মানা যায়নি অনেক প্রচলিত রীতি নীতিও। ২৬ জানুয়ারি (26th January) প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day) মত বিশেষ দিনের ধারাবাহিকতাকেও বাধ্য হয়ে অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছিল। আরও একটি নতুন বছর, আরও একটি প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপন। কিন্তু অতিমারি করোনার ছায়া যে কোনওভাবেই পিছু ছাড়ছে না। গত বছরের মত এই বছরেও করোনা আবহেই গোটা দেশ জুড়ে (India) কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই পালিত হবে ২৬ জানুয়ারি বা প্রজাতন্ত্র দিবস। আর মাত্র এক দিনের অপেক্ষা। তারপরই রাজধানীর রাজপথ (Delhi) জুড়ে দেখা যাবে প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ কুচকাওয়াজ (Parade)। করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত, তাই এই অতিমারি পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করেই এই বছরেও প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে।
যদি ২০২১ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের দিকে একটু ফিরে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে গত বছরে ২৫ হাজার মানুষের সমাবেশে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানের সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছিল। সমস্ত কোভিড প্রটোকল মেনেই পালিত হয়েছিল ২৬ জানুায়রি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতিতে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে গত বছরেও যেমন কোনও বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতি রাজধানীর রাজপথে দেখা যায় নি, আসন্ন প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানেও সেই একই ধারা বজায় থাকবে। বলা বাহুল্য, অতিমারি কোভিড পরিস্থিতির জন্যই বিগত দু বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতির যে রেওয়াজ, সেই প্রথা বিঘ্নিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন-Republic Day Parade 2022: জেনে নিন কোথা থেকে দেখতে পাবেন R Day Parade এর লাইভ টেলিকাস্ট
আরও পড়ুন-Republic Day 2022: ইন্ডিয়া গেটে প্যারেড দেখতে চান - কীভাবে টিকিট কাটবেন, জেনে নিন
আগামী ২৬ জানুয়ারী প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে কারা উপস্থিত থাকতে পারবেন সেই বিষয় একটা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সরকারের তরফে। বিশেষ কিছু ব্যক্তিত্বই নয়াদিল্লির রাজপথের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগদানের সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, মহামারি পরিস্থিতির জন্যই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। গত সপ্তাহের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে প্রায় ২৪ হাজারের মানুষের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, সঙ্গে আবার দোসর ওমিক্রন....এই সরকল বিষয়কে মাথায় রেখে সিদ্ধান্তে বদল এনেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ২৪ হাজারের সংখ্যা কমিয়ে এক ধাক্কায় সেটিকে পাঁচ হাজার থেকে আট হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৫ বছরের নীচে কোনও শিশুকে এই কুচকাওয়াজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয় নি।
সমস্ত কোভিড প্রটোকল মেনেই কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সমস্ত কোভিড প্রটোকল মানতে হবে। অনুষ্ঠানে যোগদানের পূর্বে ডবল ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট যেমন দেখাতে হবে তেমনই মাক্স পড়া বাধ্যতামূলক, করা হবে থার্মাল চেকিংও। সেই ক্ষেত্রে কারোর শরীরে যদি ন্যূনতম তাপমাত্রাও থেকে থাকে তাঁর এন্ট্রি আটকে দেওয়া হবে। এছাড়াও প্রবেশ পথে কোভিড বুথের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যদি কারোর সেই মুহুর্তে কোনও রকম সিমটম দেখা নজরে আসে বা শরীর খারাপ লাগে তাঁর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ শুরুর যে সময় অর্থাৎ সকাল ১০ টা বেজে ৩০ মিনিট, সে ক্ষেত্রেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের তরফে এর স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে জানান হয়েছে, দিল্লির আকাশে কুয়াশার গতিবিধি কেমন থাকে তার জন্যই ধারাবাহিক নিয়েমর পরিবর্তে আধঘন্টা দেরিতে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতবারের মত এই বছরেও প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে কোনও বিদেশী ব্যক্তিত্ব বিশেষ অতিথির আসন অধিগ্রহণ করছেন না। প্রাক করোনাকালে পাঁচটি মধ্য এশিয়ার দেশ থেকে প্রধান অতিথিকে নির্বাচন করে কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রন জানানো হত। কিন্তু মহামারি পরিস্থিতির জেরে সেই সব এখন অতীত।
চলতি বছরে, ১২ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং নয়টি মন্ত্রক ও বিভাগকে কুচকাওয়াজে তাদের ট্যাবেলো প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, কর্ণাটক, মেঘালয়, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। কিন্তু আসন্ন প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্যাবেলোর প্রদর্শনের নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, তামিলনাড়ুতে ট্যাবেলো প্রদর্শন কেন্দ্রের তরফে বাতিল করার পরই এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।