সংক্ষিপ্ত

সাহায্য চেয়ে শেষমেশ পুলিশের কাছে হাত পেতেছেন পাকিস্তান থেকে আসা সীমা হায়দর এবং ভারতের সচিন মীনা।

পাকিস্তান থেকে ৪ সন্তানকে নিয়ে এসে বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন প্রায় ৩০ বছর বয়সী সীমা হায়দর। PUBG খেলার ‘বন্ধু’ সচিন মীনাকে বিয়ে করে উত্তরপ্রদেশে সংসার পেতেছিলেন তিনি। কিন্তু, কয়েক মাস পরেই এই খবর জানাজানি হতে দেশ জুড়ে পড়ে গেছে শোরগোল। সীমা হায়দর কীভাবে বেআইনি পথে ভারতে এসে ঢুকলেন, কেন তিনি এতদিন ভারতে রয়েছেন, পাকিস্তানি জঙ্গিদের সাথে তাঁর যোগসাজশ রয়েছে কিনা, এইসব সন্দেহে তাঁকে ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রশ্নের কবলে পড়তে হয়েছে বারবার। তাঁকে অবৈধ আশ্রয় দেওয়ার জন্য তাঁর বর্তমান স্বামী সচিন মীনা এবং তাঁর বাবা-কেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ, পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পেলেও তাঁদেরকে একাধিকবার জেরা করা হয়েছে। এর পরেই মহা সমস্যায় পড়েছেন সচিন-সীমার পরিবার। 

সূত্রের খবর, সীমা এবং সচিন উত্তরপ্রদেশের যে বাড়িতে সংসার পেতেছিলেন, সেই বাড়ির বাইরে সারা দিন জুড়েই সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ভিড় করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সমস্ত কিছু এড়িয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ধারন করতে সেই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে এই দম্পতিকে। গ্রেটার নয়ডার রবুপুরাতে অন্য আরেকটি বাড়িতে বাস করতে শুরু করেছেন সীমা এবং সচিন। কিন্তু, তাতেও নিস্তার নেই। সেখানেও প্রায় ঘরবন্দি হয়ে কাটাতে হচ্ছে তাঁদের পরিবারের সমস্ত সদস্যকে।

সচিনের বাবা নেত্রপাল সংবাদমাধ্যমের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, “আমরা দিন-আনি দিন-খাই মানুষ। কিন্তু যে দিন থেকে পুলিশ আমাদের নির্দেশ দিয়েছে যে, ঘর ছেড়ে বেরোনো যাবে না, সেই দিন থেকেই গোটা পরিবারকে ঘরবন্দি হয়ে কাটাতে হচ্ছে। বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছি না। বাইরে না বেরোতে পারলে কাজও জোগাড় হবে না। পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে গেছে। আমাদের ঘরে কোনও খাবারদাবারও নেই।” অতি দ্রুত এই বিপদের কোনও সমাধান বার করার জন্য রাজ্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “এমনিতেই আমরা এখন ঘরবন্দি। বাড়িতে যেটুকু খাবার ছিল, সেগুলোও শেষ হয়ে গেছে। এ বার আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।" সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর কাতর আবেদন, "আমাদের এই পরিস্থিতি প্রশাসনের উচ্চস্তরের আধিকারিকদের কাছে পৌঁছে দিলে ভালো হয়। যাতে খুব তাড়াতাড়ি এর কোনও সমাধান বের হয়। আমাদের পরিবারটা তাহলে বেঁচে যাবে।”

প্রতি নিয়ত পুলিশের নজরে থাকতে হচ্ছে সীমা এবং সচিনকে। এর দরুন তাঁদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বাইরে গিয়ে নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র কিনতে হলেও এখন মহা ফ্যাসাদে পড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ক্রমাগত তাঁদেরকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা। যদিও, সীমা জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি আর কখনওই পাকিস্তানে ফিরে যেতে চান না। তিনি ভারতে নিজের স্বামী শচীনের সাথেই থেকে যেতে চান। কিন্তু, তাঁকেই আশ্রয় দেওয়ার কারণে সচিন মীনা-র চাকরি চলে গিয়েছে। সচিনের বাবাও চাকরি হারিয়েছেন। এখন খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবে ঘরের ভেতরেই বন্দিদশায় জীবন কাটাচ্ছেন। 

আরেকদিকে, সীমার ওপর সন্দেহ অব্যাহত রেখেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তিনি পাকিস্তানেরই নাগরিক কি না, তার প্রমাণ পেতে তাঁর এবং তাঁর সন্তানদের পাসপোর্ট, ভিসা, পাকিস্তানি পরিচয়পত্র-সহ সমস্ত নথিপত্র পাকিস্তানি দূতাবাসে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করে পরীক্ষা করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যত দিন না সমস্ত রিপোর্ট প্রকাশ হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালানো হবে। তার পর চার্জশিট তৈরি হবে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর সীমাকে ভারতে থাকতে দেওয়া হবে, না কি পাকিস্তানে পাঠানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। 

আরও পড়ুন- 
India Pakistan: ইন্সটাগ্রামে ভারত-পাকিস্তান ভালোবাসা, রাজস্থানের নাবালিকার অদ্ভুত কীর্তি
Buddhadeb Bhattacharjee: এখনও ভেন্টিলেশনে রয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রবিবার সকালে নতুন আপডেট
Before Dying Symptoms: শিবপুরাণ অনুসারে মৃত্যুর আগে এই লক্ষণগুলি বুঝিয়ে দেয় মানুষের বেঁচে থাকতে আর কতদিন বাকি
Astrological Tips: সকালে ঘুম থেকে উঠেই এই ৫টি কাজ একেবারেই করবেন না, সারাটা দিন খারাপ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে