সংক্ষিপ্ত
শহিদ সিপাহী আলম বেগের মাথার খুলিটি যুদ্ধের পুরস্কার স্বরূপ ইংল্যান্ডে নিয়ে চলে গিয়েছিল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয় স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধের একজন শহীদ সিপাহী আলম বেগের মাথার খুলি ভারতে কবর দেওয়ার জন্য আনা হবে, ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য যাঁকে কামান দিয়ে টুকরো টুকরো করে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ।
এই প্রচারাভিযানটি ব্রিটিশ প্রফেসর কিম এ. ওয়াগনার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যিনি লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটিতে গ্লোবাল এবং ইম্পেরিয়াল হিস্ট্রি পড়ান এবং দ্য স্কাল অফ অ্যালুম ভেগ: দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অফ এ রেবেল অফ ১৮৫৭ বইটির লেখকও৷
প্রফেসর কিন ওয়াগনার 'Thuggee: Banditry and the British in Early Nineteenth-century India', ‘The Great Fear of 1957: Rumours, Conspiracies and the Making of Indian Uprising’- এর মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশ করেছেন, এবং 'অমৃতসর 1919: এন এম্পায়ার অফ ফিয়ার অ্যান্ড দ্য মেকিং অফ আ ম্যাসাকার'-ও তাঁর নিজের লেখা।
ওয়াগনার বলেছেন যে, এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের ট্রফিটি ১৯৬৩ সালে দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের একটি পাব থেকে পাওয়া গিয়েছিল। মালিক এটি ২০১৪ সালে তাঁর কাছে হস্তান্তর করেছিলেন এবং তিনি ২০১৭ সালে অ্যালুম ভেগের উপর এই বইটি প্রকাশ করেছিলেন৷
ওয়াগনার বলেছেন যে মাথার খুলিটি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কেউ আয়ারল্যান্ডে নিয়ে এসেছিলেন এবং পরে হস্তান্তর করেছিলেন। “এর সাথে পাওয়া হাতে লেখা নোটটি প্রকাশ করে যে, মাথার খুলিটি অ্যালুম ভেগের, ব্রিটিশ চাকরিতে নিযুক্ত একজন ভারতীয় সৈনিক, যাকে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহে অংশ নেওয়ার জন্য একটি কামান দ্বারা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় উপস্থিত একজন আইরিশ অফিসার তাঁর মাথাটি একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধের পুরস্কার হিসাবে নিয়ে গিয়েছিল”, লিখেছেন কিম ওয়াগনার।
পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস সেহরওয়াত একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, ১৮৫৭ সালের বিপ্লবের সময়, আলম বেগ -কে বন্দী করা হয়েছিল এবং কামান দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ডে তার মাথার খুলি পাওয়া গেছে। মাথার খুলির একটি সম্পূর্ণ অনুসন্ধান রেকর্ড পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা এখন খুলির পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে আগ্রহী। জানা গেছে যে আলম বেগ উত্তর প্রদেশের কানপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং এমনকি একটি পরিবার তাঁকে নিজেদের পূর্বপুরুষ বলেও দাবি করেছে।
বারাণসীর বিএইচইউ-তে জেনেটিক্স পড়ান এমন অধ্যাপক দিনেশ্বর চৌবের মতে, আলম বেগের মাথার খুলিতে দুই ধরনের পরীক্ষা করা যেতে পারে। দিল্লিতে বসবাসকারী কানপুরের একটি পরিবার আলম বেগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে দাবি করেছে। তাদের জিন-এর সাথে মাথার খুলিটি মেলানো যায়। কিম ওয়াগনার এবং অন্যান্য ইতিহাসবিদরা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এমন একটি জায়গায় কবর দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন, যেখানে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
ওয়াগনার বলেছেন যে ব্রিটিশরা একটি খ্রিস্টান যাজক পরিবারকে হত্যা করার জন্য আলম বেগকে অভিযুক্ত করেছিল। রেকর্ডে বলা হয়েছে যে তিনি বেঙ্গল নেটিভ ইনফ্যান্ট্রির ৪৬ তম রেজিমেন্টের একজন সিপাহী ছিলেন। প্রফেসর কিম ওয়াগনার বিশ্বাস করেন যে, হাভালদার আলম বেগকে তার দেশে সমাধিস্থ করার এটাই সঠিক সময়, যেখানে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাভি নদীর তীরে ত্রিমু ঘাটের যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি বলেন, “আলম বেগের মাথার খুলি ফেরত দেওয়াকে আমি রাজনৈতিক মনে করি না। আমার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র আলম বেগের মরদেহ নিজের মাতৃভূমিতে নিয়ে আসা, যাতে তিনি নিজের মৃত্যুর অনেক পরে শান্তিতে থাকতে পারেন।”
আরও পড়ুন-
Weather News: দফায় দফায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি, বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত
স্বপ্নে গোপাল ঠাকুরের দর্শন পেলে কী হয়? জন্মাষ্টমীর আগে জেনে নিন গূঢ় রহস্য
পুজো করার সময় চোখ থেকে জল পড়া বা হাত পুড়ে যাওয়া কি অশুভ লক্ষণ? জেনে নিন এখনই