প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোনিয়া গান্ধীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। দেশের প্রথম উপজাতির মহিলা রাষ্ট্রপতি ও ভারতীয় মহিলা - সকলেরও কাছে এই মন্তব্য অসম্মানজনক বলেও মন্তব্য করেছে।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (President Draupadi Murmu) 'দরিদ্র মহিলা' বলে সম্প্রতি নতুন রাজনৈতিক বিতর্কের তৈরি করেছেন কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। যা নিয়ে রীতমত সরগমর দিল্লির রাজনীতি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করার সময় সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, 'রাষ্ট্রপতি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। বেচারা তিনি কথাই বলতে পারতেন না। ' রাষ্ট্রপতি ভবন সোনিয়া গান্ধীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। রাষ্ট্রপতি ভবন জানিয়েছে, এটি অসম্মানদন মন্তব্য। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের মর্যাদার জন্য এজাতীয় মন্তব্য ক্ষতিকারক। রাষ্ট্রপতি ভবন আরও জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রান্তিক সম্প্রদায় ও কৃষকদের প্রতিনিধি। এজাতীয় মন্তব্যে সংশ্লিষের জন্য উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে ভারত? সিপিএম সাংসদের প্রশ্নে অবস্থান স্পষ্ট করল কেন্দ্র

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোনিয়া গান্ধীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। দেশের প্রথম উপজাতির মহিলা রাষ্ট্রপতি ও ভারতীয় মহিলা - সকলেরও কাছে এই মন্তব্য অসম্মানজনক বলেও মন্তব্য করেছে। তিনি আরও বলেছেন, 'কংগ্রেস রাজপরিবার এখনও প্রকাশ্যে রাষ্ট্রপতিকে অসম্মান করছে।' তিনি সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতি অবজ্ঞ প্রকাশেরও অভিযোগ করেছেন।

বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বাছতে ফর্মুলা বদল দিল্লির! জল্পনায় দিল্লিবাসী বাঙালি নেতার নাম

সোনিয়া গান্ধীর মন্তব্য উপজাতি এবং সাধারণ মানুষের প্রতি কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের কুসংস্কারকে উন্মোচিত করেছে। দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত একজন উপজাতি মহিলার অস্বস্তি ভারতের বংশগত রাজনীতি থেকে সরে আসার প্রতি কংগ্রেসের অস্বস্তিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। কংগ্রেসের উপজাতি স্বার্থকে অবহেলা করার, উপজাতি বীরদের স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হওয়ার এবং এই সম্প্রদায়ের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে অবমূল্যায়ন করার ইতিহাস রয়েছে। উপজাতি অধিকারের প্রতি তাদের উদাসীনতার মধ্যে এর বৈষম্যমূলক ট্র্যাক রেকর্ড স্পষ্ট। রাষ্ট্রপতি মুর্মুর বরখাস্ত এই মানসিকতাকেই প্রতিফলিত করে।

এর আগে জুলাই মাসে কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে 'রাষ্ট্রপত্নী' বলে উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর মন্তব্যে ফুটে উঠেছিল লিঙ্গবৈষম্য, সামন্ততান্ত্রিক ও বর্ণবৈষম্যের দৃষ্টিভঙ্গি।

বারবার রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে এজাতীয় মন্তব্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তিনি যদি সাধারণ কোনও পটভূমি থেকে আসতেন তাহলে কংগ্রেস বারবার তাঁকে আক্রমণ করত কিনা? দলের বংশগত এবং অভিজাত বিশ্বদৃষ্টি অভিজাত লুটিয়েন রাজনীতির পরিবর্তে প্রকৃত ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী একজন উপজাতি নেতাকে গ্রহণ করতে পারে না। সোনিয়া গান্ধীর মন্তব্য লক্ষ লক্ষ উপজাতি নাগরিককে অপমান করেছে, যারা মুর্মুর উত্থানকে শাসনব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তরে অগ্রগতি এবং প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হিসেবে দেখে। কংগ্রেস দল এই গভীর সামাজিক পরিবর্তনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।