প্রকাশ ভোই বলেন, সরকারি হাসপাতাল দূরে থাকার জন্য পর্যান্ত টাকা না থাকায় যেতে পারেন নি বেসরকারী হাসপাতালে। এমনকি তার ইউপিআইও কাজ করছিল না। তাই একপ্রকার ডাক্তার না দেখিয়েই এই অবস্থায় তাকে স্কুলে ফিরে আসতে হয়।

অসুস্থতার জন্য ছুটি চেয়েও মেলে নি। তাই হাতে লাগানো স্যালাইনের বোতল সেই অবস্থাতেই স্কুলের ক্লাসরুমে হাজির হলেন শিক্ষক। এই ঘটনার কথা সোস্য়াল মিডিয়ায়া জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে চর্চা। অসুস্থ শিক্ষকের ছুটির আবেদন বারবার নাকচ করায় প্রশাসনের অমানবিক মনোভাবেরই পরিচয় নিয়ে সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই বললেন,শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড হলেও, তাঁদের প্রতি এমন অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না।

সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, ওড়িশার বোলাংগির জেলার একটি স্কুলের গণিত শিক্ষক প্রকাশ ভোইয়ের ঘটনাটি শিক্ষাব্যবস্থায় মানবিকতার অভাব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। গুরুতর অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিজয়লক্ষ্মী প্রধান তাঁকে ছুটি দিতে অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়ে প্রকাশ ভোই হাতে স্যালাইন লাগিয়েই ক্লাসে আসেন। এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠেছে অমানবিক আচরণের অভিযোগ।

সংবাদ সূত্রে জানা যায়, প্রকাশ ভোইয়ের দাদু মারা যাওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই অসুস্থ শিক্ষকের অভিযোগ, বিশ্রামের জন্য তিনি ছুটির আবেদন জানালেও প্রধান শিক্ষিকা তা নাকচ করে দেন। অর্থের অভাবে তিনি চিকিৎসা করাতে না পেরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রকল্প সমন্বয়কের কার্যালয়ে যান, যেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।

প্রকাশ ভোই বলেন, সরকারি হাসপাতাল দূরে থাকার জন্য পর্যান্ত টাকা না থাকায় যেতে পারেন নি বেসরকারী হাসপাতালে। এমনকি তার ইউপিআইও কাজ করছিল না। তাই একপ্রকার ডাক্তার না দেখিয়েই এই অবস্থায় তাকে স্কুলে ফিরে আসতে হয়। পরের দিনও শরীর খারাপ থাকায় তিনি আবারও ছুটির আবেদন করেন, কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা তা প্রত্যাখ্যান করেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে স্যালাইন লাগিয়েই স্কুলে আসেন প্রকাশ ভোই। তাঁর সহকর্মীরা তাকে ওমন অবস্থা দেখে দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাটনাগড় ব্লক শিক্ষা আধিকারিক প্রসাদ মাঝি জানান, তাঁরা বিষয়টি শুনেছেন, তদন্ত করে দেখা হবে । অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানালেন ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।