সংক্ষিপ্ত
সন্ত্রাস বিধ্বস্ত শোপিয়ান ছাড়লেন শেষ কাশ্মীরি পণ্ডিত ডলি কুমারী। গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি তাঁর ব্যবসার দায়িত্ব দিয়ে যান প্রতিবেশী মুসলিমদের হাতে। বর্তমানে তাঁর ঠিকানা জম্মুতে ভাইয়ের বাড়ি।
ডলি কুমারী,শোপিয়ান জেলার চৌধুরীগুন্ড গ্রামের শেষ কাশ্মীরি পণ্ডিত। তিনিও এবার সন্ত্রাসকবলিত গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন জম্মুতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি গ্রাম ছাড়েন। আপাতত তাঁর ঠিকানা জম্মু। বর্তমানে উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বেছে বেছে টার্গেট করছে সন্ত্রাসবাদীরা। কিন্তু সেইসব উপেক্ষা করেই এতদিন এই গ্রামে সাতটি কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার বাস করতে। তবে আর নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিতে নারাজ তারা। এই পরিস্থিতিতে গ্রামের সাতটি পরিবার আগেই জম্মুতে চলে গিয়েছে। এবার শেষ কাশ্মীরি পণ্ডিত হিসেবে গ্রাম ছাড়লেন ডলি।
ডলি জানিয়েছেন , 'এখনও এখানে ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। আমি আর কী করতে পারি?' কাশ্মীরি পণ্ডিতরা যখন দলে দলে গ্রাম ছাড়ছেন তখনও নিজের ভিটেমাটি, পৈত্রিক সম্পত্তি আঁকড়ে দিন কাটাচ্ছিলেন ডলি। কিন্তু আর তিনিও সন্ত্রাসের গ্রামে থাকতে পারলেন না। ডলি জানিয়েছেন, 'পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমি আবারও গ্রামে ফিরে আসব। এটা আবার বাড়ি। কে আর তার বাড়ি ছেড়ে যেতে চায়। সকলেই নিজের বাড়ি ভালবাসে। আমি দুঃখের সঙ্গেই আমার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছি।'
গত ১৫ অক্টোবর কাশ্মীরি পণ্ডিত পুরাণ কৃষাণ বাটকে চৌধুরীগুন্ড গ্রামে তার বাড়ির বাইরে হত্যা করা হয়। তার দুই মাস আগে শোপিয়ানের চোটিগাম গ্রামের একটি আপেল বাগানে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে এক কাশ্মীরি পণ্ডত নিহত হন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেই ডলি বলেন, 'আমাকে বলুন যে আপনার পাশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে আপনি কী করতেন? ভয়কে সঙ্গে করেই এতদিন গ্রামে থেকে গিয়েছিলাম। কিন্তু আর এখানে থাকা সম্ভব নয়। '
ডলি আরও জানিয়েছেন তিনি নিজের গ্রামে আপেলের বাক্স ফেলে রেখে যাচ্ছেন। প্রতিবেশী মুসলিমদেরই আপেল মাণ্ডির দায়িত্ব দিয়ে জম্মুতে চলে যাচ্ছেন। প্রতিবেশী গোলাম হাসান জানিয়েছেন, তিনি ডলিকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করছেন। তবে গ্রামে থেকে যেতে বলতে তাঁরও ভয় করছে বলে জানিয়েছেন। তিনি নিজেই জানিয়েছেন জম্মুতে আপাতত ভাইয়ের বাড়িতেই ডলিকে আশ্রয় নিতে বলেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, পুরাণ কৃষাণ ছিলেন গ্রামের সবথেকে ভাল মানুষ। তাঁকে হত্যা করে জঙ্গিরা ঠিক কাজ করেনি। একের পর এক কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যারও নিন্দা করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন সন্ত্রাসের কারণেই গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা।
যদিও শোপিয়ানের জেলা প্রশাসন এই কথা মানতে নারাজ। জেলা প্রশাসনের দাবি এজাতীয় প্রতিবেদনগুলি ভিত্তিহীন। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এটা কাশ্মীরি আপেলের মরশুম। এই ভরা মরশুমেই কাশ্মীরি পণ্ডিতরা নিজেদের ব্যবসা ফেলে রেখেই পালিয়ে যাচ্ছেন। ডলির আপেলের বাগান রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন স্থানীয় মুলসিম প্রতিবেশীদেরই তিনি সেই আপেল বাগানের দায়িত্ব দিয়ে এসছেন। তাঁর বাগানে প্রায় ১০০০ বাক্স আপেল উৎপন্ন হয়।। মাণ্ডি থেকে বাক্সে ভরে আপেল বাইরে পাঠানোর দায়িত্ব তাঁর প্রতিবেশী মুসলমানরা নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ডলি।
আরও পড়ুনঃ
মমতা-অমিত শাহ দূরত্ব বাড়ছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা 'চিন্তন শিবিরে' যাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী
ওয়ার্মারে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু, দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নার্সকে বরখাস্ত করল হাসপাতাল
পর্নোগ্রাফি একটি পাপ- এর সঙ্গে যুক্ত যাজক ও সন্ন্যাসীরাও, বিস্ফোরক মন্তব্য পোপ ফ্রান্সিসের