সংক্ষিপ্ত


রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও কেন ইডি গ্রেফতার করেছে মানিক ভট্টাচার্যকে। এই আর্জি নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। তবে তাতে তেমন কোনয়ও লাভ হয়নি। আপাতত ইডি-র হেফাজতে থাকবেন মানিক ভট্টাচার্য। তবে সিবিআইকে বিশেষ নির্দেশ

প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তে স্বস্তি পেলেও আপাতত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের অপসারিত চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। ইডির গ্রেফতারির বিরুদ্ধে  মানিক ভট্টাচার্য যে আবেদন জানিয়েছিলেন তাত শুনানি আপাতত স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সিবিআই মামলায় কিছুটা হলেও তৃণমূল বিধায়ককে স্বস্তিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কারণ মানিক ভট্টাচার্যের জন্য যে রক্ষাকবচ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে তা এখনও বজায় রয়েছে বলেও জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর মানিক ভট্টাচার্যের এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের হেফাজতে থাকার ওপর কোনও প্রভাবই পড়ছে না। 

গত ১০ অক্টোবর মানিক ভট্টচার্যকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তারপর থেকে ইডির হেফাজতে রয়েছেন তিনি। এই এবস্থায় ইডির গ্রেফতারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। সোমবার প্রথম সেই মামলার শুনানি হয়। এদিন ছিল দ্বিতীয় দিনের শুনানি। এই অবস্থায় মানিক ভট্টাচার্যের অভিযোগ ছিল তাঁকে সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে। সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না। এই অবস্থায় কেন তাঁকে ইডি গ্রেফতার করেছে। তাঁর হয়ে এদিনও আদালতে সওয়াল করেন মুরুক রোহতগি। এর পাশাপাশি তিনি দ্রুত এই মামলার শুনানিও চান বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেচে আগামী সপ্তাহের শুরুতে। ততদিন পর্যন্ত ইডির হেফাজতেই থাকতে হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। 

অন্যদিকে এদিন আদালত সিবিআইএর কাছ থেকে টেট দুর্নীতি মামলার তদন্তের রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যেরকে নিয়ে বা স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই যে তদন্ত করছে তাও চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সিবিআইতে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ সিবিআই নিতে পারবে না। তাঁর ওপর দেওয়া রক্ষাকবচ বজায় থাকবে বলেও জানিয়েছে সিবিআই। 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ২৩ জুলাই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। অর্পিতার বাড়ি বা ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাশি রাশি টাকা। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ওই টাকা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অঙ্গ হিসেবেই মনে করছে ইডি আর সিবিআই-এর কর্মকর্তারা। আবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়িয়ে গিয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের। তাঁকে একাধিকবার ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না , এই অভিযোগ তুলেই মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। 

যাইহোক আপাতত ইডির হেফাজতেই রয়েছেন মানিক ভট্টচার্য। তদন্তকারীদের সূত্রে প্রাথমিক  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক ভট্টচার্য জড়িতে বলেও ইডির হাতে একাধিক প্রমাণ রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মানিক ভট্টাচার্যের প্রচুর বেআইনি সম্পত্তিরও সন্ধান পেয়েছে ইডি। পরিবারের সদস্যদেরও বেআইনি সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। আর সেই কারণেই ইডি মানিককে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যের অপসারণের যে রায় কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছিল তাও ঠিক ছিল না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যের সম্পত্তির হিসেবে ও পারিবারিক আয়ের হিসেবও হলফনামা আকারে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। এই রায়ের ওপরেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।