সংক্ষিপ্ত
সকালে অভিষেক ত্রিপুরায় পা রাখার আগে থেকেই উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। সেখানে তৃণমূলের লাগানো ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এরপর ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার সময় রাস্তায় বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা।
আজ সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল ত্রিপুরা। আর সেখানে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাওয়ার পর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গোব্যাক স্লোগান থেকে শুরু করে তাঁকে কালো পতাকা দেখানো ও তাঁর কনভয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আর বিকেলের দিকে সাংবাদিক বৈঠক করে কার্যত সে রাজ্যের বিজেপি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। বলেন, "আমরা ত্রিপুরাকে পাখির চোখ করছি। আগামী দেড় বছরে রাজ্যকে বিজেপি সরকারের অপশাসন থেকে মুক্ত করা এবং আমাদের সরকার গড়ার লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে।"
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় অভিষেকের গাড়িতে হামলা, সংসদে সরব ডেরেক, টুইটারে ক্ষোভপ্রকাশ দলীয় নেতাদের
সকালে অভিষেক ত্রিপুরায় পা রাখার আগে থেকেই উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। সেখানে তৃণমূলের লাগানো ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এরপর ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার সময় রাস্তায় বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। তখন গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। তারপর তারা সরে যায়। এরপর রাস্তার দু'পাশে হাতে বিজেপির পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কিছু মানুষ তাঁর গাড়ির উপর বাঁশ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালান। সেই হামলার জেরে তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে গিয়েছে। এমনকী, নিরাপত্তারক্ষীরা জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "অতিথি দেব ভব বলে যে কাণ্ড ঘটিয়েছে সেটা সবাই দেখলেন। মা ত্রিপুরেশ্বরীর কাছে যাতে আমি পৌঁছাতে না পারি তার সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে। আমার গাড়িতে বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৩ জন কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের পিঠে ও কোমরে চোট লেগেছে। তবে এভাবে আমাকে আটকানো যায়নি।"
"
এরপর সিপিআইএমের প্রসঙ্গ টেনে এনে অভিষেক বলেন, "আমরা সিপিআইএম নই, যে চিমটি কাটলেই বসে যাব। আমাদের যত তাতাবে, তত শক্তিশালী হব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল লোহার মতো। এখানে এতদিন ধরে কোনও উন্নয়ন হয়নি।" বিজেপি সরকারকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, "আজ থেকে এখানে স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হল এটা অনেক দিন ধরে চলবে। আজ থেকে এখানে তৃণমূল পা রাখল। দেড় বছরের মধ্যে এখানে সরকার প্রতিষ্ঠা করে তবে রাজ্য ছাড়বে।"
আরও পড়ুন- ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির যাওয়ার পথে অভিষেকের গাড়িতে হামলা, ভাঙল কাঁচ
একুশের নির্বাচনে বাংলায় বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হওয়ার পর এখন জাতীয় রাজনীতিতে প্রথমের সারিতে রয়েছেন মমতা। আর বাংলার পর এবার ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। ২০২৩ সালে সেখানে বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগিয়ে যেতে যায় তারা। আর তাতে অভিষেকের উপর আজকের এই হামলা অনেকটাই গতি দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সেই হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে এখন থেকে মাসে তিন থেকে চারবার ত্রিপুরায় যাবেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, "আমি আজ এসেছি, এখন থেকে মাসে তিন-চার বার আসব। আগামী দিনে যাতে ত্রিপুরায় দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশন, কন্যাশ্রী হয় সেই উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছি। দুই সপ্তাহের মধ্যে আবার আসব। বিপ্লববাবুকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি পারলে আটকান।"
আরও পড়ুন- Tripura পৌঁছলেন Abhishek, উঠল 'Go Back' স্লোগান, দেখানো হল কালো পতাকাও
ত্রিপুরায় সরকার গঠনই যে লক্ষ্য তাও বারেবারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর হুঁশিয়ারি, "সারা দেশে বিজেপিকে কেউ ল্যাজেগোবরে করে হারাতে পারে সেই দলের নাম তৃণমূল কংগ্রেস। নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে গেলাম, পায়ের তলার ভূমি বাঁচিয়ে নিন। ত্রিপুরাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছে। আজ থেকে বিজেপির বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। সমাজবিরোধীদের খেলা শেষ। মা-মাটি মানুষের খেলা শুরু।"