সংক্ষিপ্ত
- গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ জানতে উদ্যোগ
- স্বামী কাস্তে দিয়ে চিরে ফেলে পেট
- সন্তানের মৃত্যু হয় জন্মের আগেই
- মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন স্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও স্লোগানকে আরও একবার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন উত্তর প্রদেশের বুদুনের এক ব্যক্তি। কারণ গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গ জানতে একটি কাস্তে দিয়ে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে ছিঁড়েফেলেন বলে অভিযোগ। একবার নয় একাধিক বার স্ত্রীর পেটে আঘাত করা হয়। এই ঘটনায় তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়। দিল্লির একটি হাসপাতালে মৃত্য়ুর সঙ্গে লড়াই করছেন নির্যাতিতা মহিলা।
আক্রান্ত মহিলার ভাই গোলুভাই সিং জানিয়েছেন, দম্পতির পাঁচটি কন্যাসন্তান রয়েছে। কিন্তু ছেলে না নওয়ার দিদির ওপর প্রায়ই অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সদ্যোই দিদি গর্ভাবতী হয়। তখন থেকেই সন্তানের লিঙ্গ জানতে উদ্যোগ নেয় পরিবারের আত্মীয়রা। কিন্তু দিদির স্বামী যে এমন কাণ্ড করবে তা তারা স্বপ্নেও ভাবেনি। গোলুভাই আর পুলিশ জানিয়েছে একটি কাস্তে দিয়ে গর্ভাবতী মহিলার পেটে কোপ মারে অভিযুক্ত। একবার নয় বারবার। আর এই ঘটনা গর্ভস্ত পুত্র সন্তানের মৃত্যু হয়। রবিবার রাতেই এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই চম্পট দেয় অভিযুক্ত। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
ভারতের অধিকাংশ পরিবারই এখনও পর্যন্ত কন্যা সন্তানদের বোঝা হিসেবে মনে করে। পাল্টা পুত্র সন্তানকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবেই চহ্নিত করে। তার মূল কারণ হল পণপ্রথা। ২১ শতকেও এই কুসংস্কার থেকে মুক্তি পায়নি ভারত। এখনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে গর্ভস্থ অবস্থাতেই লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়। পাল্লা দিয়ে চলে বেআইনিভাবে কন্যা ভ্রূণ হত্যা। আর সেই কারণে বর্তমান ভারতে কমছে মহিলার সংখ্যা। গত জুলাই মাসে প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৫-১৭ সালে ১০০০ পুরুষ প্রতি মহিলার অনুপাত ছিল ৮৯৬। ২০১৪-১৬ সালে এই অনুপাত ছিল ১০০০: ৮৯৬। আর ২০১৩-১৫ সালে মহিলাদের অনুপাত ছিল ৯০০। বর্তমান ভারতে ভ্রূণ হত্যা পুরোপুরি নিষিদ্ধ দেশে। শুধুমাত্র চিকিসাকর প্রয়োজনেই ভ্রূণ হত্যার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব নিয়মনীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জন্মের আগেই সরিয়ে ফেলা হচ্ছে মেয়েদের। জন্মের পরেও খুন করা হচ্ছে অনেক জায়গায়।