সংক্ষিপ্ত

আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেটে (Union Budget 2022-23), কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপরে জোর দেওয়া হতে পারে। এই বিষয়ে কী প্রত্যাশা করছে কর্পোরেট জগত?
 

আসছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট (Union Budget 2022-23)। নোট বাতিলের (Demonitisation) পর থেকেই, ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির অভিমুখ নিম্নগামী। তার উপর রয়েছে, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে কোভিড-১৯ মহামারি (COVID-19 Pandemic) এবং তাকে ঠেকাতে জারি করা লকডাউন ও বিভিন্ন বিধিনিষেধের ধাক্কা। তাই, ভারতের অর্থনীতিকে ফের আগের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য, আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্পোরেট জগত মনে করছে, এই বাজেটে জোর দেওয়া হতে পারে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৃদ্ধির উপরে। 

গত দুই বছরে ভারতের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে, উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এমএসএমই সেক্টরে অর্থাৎ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রগুলির জন্যও বেশ কিছু চিত্তাকর্ষক আর্থিক পরিবর্তন করেছে মোদী সরকার (Modi Govt)। গত বাজেটে গ্রহণ করা হয়েছে 'আত্মনির্ভর ভারত'-এর (Atmanirbhar Bharat) মতো উদ্যোগও। কিন্তু, তারপরও অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে, বেশ কিছু সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল কর্মসংস্থান সৃষ্টি। 

আরও পড়ুন - ইউনিয়ন বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রের প্রত্যাশা,৬ শতাংশ জিডিপি বরাদ্দের সঙ্গে জোড় দিতে হবে অনলাইন প্রশিক্ষণেও

আরও পড়ুন - ইউনিয়ন বাজেটে কী কোভিড টিকাকরণের নতুন কোনও প্রোগ্রাম লঞ্চ হবে, অপেক্ষা ১ ফেব্রুয়ারির

আরও পড়ুন - কোভিড পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান তৈরি সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ, ইউনিয়ন বাজেটের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে জনসাধারণ

আর এর জন্য, অনলাইন আপস্কিলিং অর্থাৎ অনলাইন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এমনটাই বলছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, গত ২২ মাস ধরে কোভিড-১৯'এর কারণে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে বেশিরভাগ দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র। এই অবস্থায় অনলাইন মাধ্যমেই দক্ষতা উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।  

একইসঙ্গে, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী রোজগার প্রোৎসাহন যোজনা (PMRPY) অবিলম্বে ফিরিয়ে আনা উচিত। এই যোজনা অনুযায়ী নতুন কর্মীদের প্রথম তিন বছরের জন্য, ইপিএস এবং ইপিফও (EPS and EPFO) অবদান, সংস্থাগুলিকে ​​অনুদান হিসাবে দিত সরকার। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, নিয়োদকারীদের উৎসাহি করাই ছিল এই স্কিমের লক্ষ্য। ২০১৯ সালে শেষ এই যোজনার সুবিধার জন্য  দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থতিতে দ্রুত কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে, সরকার সেই স্কিম ফিরিয়ে আনবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। 

এছাড়াও, আয়কর আইনের ধারা বদলের আশাও করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে যে হারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, সেই হারে মজুরি বৃদ্ধি ঘটেনি। মূদ্রাস্ফীতির এই ধাক্কায় অধিকাংশ মানুষেরই ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয়কর আইনের ধারা বদলে,  প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা মজুরির কাজকে সরকারের 'এন্ট্রি-লেভেল কর্মসংস্থান' হিসাবে গন্য করা উচিত। বর্তমানের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা মজুরি পর্যন্ত কাজকে 'এন্ট্রি-লেভেল কর্মসংস্থান' ধরা হয়। 

কোয়েস কর্প (Ques Corp) সংস্থার ওয়ার্কফোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রেসিডেন্ট লোহিত ভাটিয়া বলেছেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন  কর্মক্ষেত্রে মেধার ঘাটতি চোখে পড়ছে। এই অন্যতম কারণ 'গ্রেট রিসাইন' (Great Resign) বা 'মহান ইস্তফা'। ২০২১ সালের শুরু থেকেই গোটা বিশ্বের মতো ভারতেও এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বেতনে অসন্তুষ্ট হয়ে প্রায় গণহারে ইস্তফা দিয়েছেন কর্মীরা। ভারতে শুধু আইটি সেক্টরেই ১০ লক্ষেরও বেশি কর্মী চাকরি ছেড়েছেন। লোহিত ভাটিয়ার দাবি, এইসব ভারতীয় প্রতিভা এখন উন্নত দেশগুলিতে পাড়ি দিচ্ছেন কাজের সন্ধানে। ফলে মেধার ঘাটতির সমস্যা ক্রমে আরও জটিল হবে।