সংক্ষিপ্ত

পাড়ার মাতব্বরদের হম্বিতম্বির সামনে অধিকারের জোর ফলিয়েছিলেন গরিব ডিম-বিক্রেতা। তারই খেসারৎ দিতে হল নিজের প্রাণ দিয়ে।

‘এখানে ডিমের দোকান বসাতে দেওয়া চলবে না’, পাড়ার মাতব্বরদের হম্বিতম্বির সামনে অধিকারের জোর ফলিয়েছিলেন গরিব ডিম-বিক্রেতা। তারই খেসারৎ দিতে হল নিজের প্রাণ দিয়ে। নৃশংসতম ঘটনা ঘটে গেল উত্তরাখণ্ডের রুরকি-তে (Roorkee) ।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে একটি বিরক্তিকর ভিডিও, যাতে দেখা যাচ্ছে যে , একজন সাদা জামা পরা ব্যক্তিকে ক্রমাগত একটি স্টিলের বালতি দিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করে চলেছে একজন কালো জামা পরা ব্যক্তি। ধাতব বালতি দিয়ে মোট এগারো বার সজোরে আঘাত করতে দেখা যায় তাকে। এতবার আঘাত পেয়ে শেষমেশ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আঘাতপ্রাপ্ত যুবক। বুধবারের এই কাণ্ড গোটা ইন্টারনেট দুনিয়াকে হতবাক করে দিয়েছে! 


সিসিটিভি ফুটেজটি উত্তরাখণ্ডের রুরকির বলে জানা গেছে। বুধবার ওই এলাকায় একটি অস্থায়ী ডিমের দোকান দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন আকাশ নামের ওই যুবক। তাঁর সঙ্গে অভিষেক নামের কালো-জামা-পরিহিত ওই যুবক এবং তার দলের কয়েকজন ছেলের বিবাদ বাধে। তারা কিছুতেই আকাশকে ওই জায়গায় ডিমের দোকান স্থাপন করতে দিচ্ছিল না। এরপরেই ডিম বিক্রেতা আকাশের সঙ্গে তাদের লড়াই শুরু হয়, আকাশ নিজের স্থানান্তর করতে অস্বীকার করে, তখনই অভিষেক তার মাথায় এগারোবার বালতি দিয়ে আঘাত করে। 


ধীরে ধীরে আকাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আইআইটি রুরকির শতাব্দী দ্বারের কাছে এই ঘটনা চলতে থাকাকালীন আশেপাশের অনেক লোক এসে জড়ো হয়, কিন্তু কেউই অভিষেককে থামাতে, বা আকাশকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এরপর একজন অটোচালককে প্রথম হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়, তিনি এগিয়ে যাওয়ার পর অনেকে অভিষেককে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, ততক্ষণ আর একবারও আকাশকে নড়তে দেখা যায়নি। 

এরপর সিভিল লাইনের পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং আকাশকে রুরকি সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে জখম অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনার পর ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। তখন প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে ভগবানপুরের বাসিন্দা অভিযুক্ত অভিষেককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার সহযোগীরা বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে, তাদেরও গ্রেফতার করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 


পুলিশি জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে অভিষেক। তার হত্যার অস্ত্র বালতিটি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা 21/24 এবং 302-এর অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিষেক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন মৃত যুবক আকাশের বাবা স্বামীনাথ।