সংক্ষিপ্ত
দীর্ঘদিন তাঁকে বয়ে বেরাতে হয়েছে মিথ্যা কলঙ্কের ভার
শেষ হয়ে গিয়েছে কর্মজীবনের সম্ভাবনা
ডিএনএ পরীক্ষায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তিনি ধর্ষক নন
সাত বছর মামলার পর ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন চেন্নাই-এর এক ব্যক্তি
সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁকে বয়ে বেরাতে হয়েছে মিথ্যা কলঙ্কের ভার। শেষ হয়ে গিয়েছে কর্মজীবনের সম্ভাবনা। ন্যায়বিচারের জন্য ঘুরতে হয়েছে আদালতের দরজায় দরজায়। অবশেষে শনিবার ধর্ষণের কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়ে ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ পেলেন সন্তোষ নামে তামিলনাড়ুর চেন্নাই শহরের এক ব্যক্তি। যে মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে এই মিথ্যা কলঙ্ক চাপিয়েছিলেন, তার গর্ভজাত সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আর যেই হোক সন্তোষ তার বাবা নয়।
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েক বছর আগে। সন্তোষের বাবা-মা ওই মিথ্যা অভিযোগকারিনী মহিলার সঙ্গেই তাঁর বিবাহ স্থির করেছিলেন। কিন্তু, তারপর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিবাহ হয়নি, সম্বন্ধ ভেঙে যায়। এরপর, সন্তোষ এক বেসরকারী কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলেন। সেইসময়ই তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। ওই মহিলার মা সন্তোষের বাবা-মাকে জানিয়েছিলেন যে তাঁর মেয়ে গর্ভবতী এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সন্তোষ তার সঙ্গে সহবাস করেছিল। সেই তাঁর মেয়ের গর্ভের সন্তানের বাবা। তক্ষণই তার মেয়েকে বিয়ে করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছিল মিথ্যা অভিযোগকারিনীর মা।
আরও পড়ুন - বালাকোট মনে আছে তো - নাগরোতা সংঘর্ষ নিয়ে ইসলামাবাদকে সতর্ক করল ভারত
আরও পড়ুন - 'মুসলিমদের জন্য কিছুই করিনি', ৬ সাক্ষাতে কীভাবে আলিমুদ্দিনের জীবন বদলে দিয়েছিলেন মোদী
সন্তোষ তাঁর প্রাক্তন বাকদত্তার সঙ্গে কোনওরকম শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা অস্বীকার করেছিলেন। এরপরই ওই মহিবলার পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তোষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সন্তোষের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে এবং তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালতে তাঁকে ৯৫ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সে জামিনে মুক্ত হলেও, তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়াশোনা, ভালো চাকরির স্বপ্ন সবই ততদিনে শেষ হয়ে গিয়েচিল।
তবে ততদিনে ওই মহিলা এক শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছিল। সন্তোষের পরিবারের পক্ষ ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার দাবি করা হয়। সেই দাবি মতো পরীক্ষা করতেই জানা গিয়েচিল সন্তোষ সেই শিশুকন্যার বাবা ছিলেন না। তারপরও আরও সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে এই মামলার শুনানি। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালত সন্তোষকে বেকসুর খালাস দেয়। তারপর, ক্ষতিপূরণ হিসাবে সন্তোষ ওই মহিলা তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করেছিল। আদালতে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন এই মিথ্যা অভিযোগ তাঁর কর্মজীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আদালত ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে।