সংক্ষিপ্ত

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগামী রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন 
  • লাদাখ ইস্যুতে ভারত পাশে পাবে আমেরিকাকে 
  • ইতিমধ্যেই শুরু হয়েগেছে জল্পনা
  • চিনা প্রেসিডেন্ট এখনও অভিনন্দন জানাননি 
     

এখনও হার স্বাকীর করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ২৭৯ ইলেক্ট্রোরাল কলেজের ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় কূটনৈতিকদের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাঁজ। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক ভালো ছিল। দুজনের দুজনকে বন্ধু বলে পরিচয় দিতেন জনসমক্ষে। পাল্টা চিনা প্রেসিডেন্ট জিংপিং এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে খুব একটা  ভালো ছিল না তা সকলেই জানতেন। আর সেই কারণে লাদাখ ইস্যুতে ভারত পুরোপুরি মার্কিন সহযোগিতা পেয়েছিল। এখন প্রশ্ন আগামী দিনেও লাদাখ সীমান্ত প্রসঙ্গসহ একাধিক ইস্যুতে ভারতের পাশে কী থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? 

মার্কিন নির্বাচনের প্রাককালেই জুনিয়ার ট্রাম্প অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুত্র জানিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন যদি রাষ্ট্রপতি মনোনীত হন তাহলে তা কখনই ভারতের পক্ষে মঙ্গলদায়ক হবে না। কারণ বাইডেন চিনের প্রতি সর্বদাই নরম মনোভাব পোষণ করেন। আর জুনিয়ার ট্রাম্পের এই মন্তব্য করেই রিপাব্লিকরা অনাবাসী ভারতীয়দের থেকে ভোট চেয়েছিল। বর্তমানে  হোয়াইট হাউসে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা বাইডেনের কাছে। আর সেই কারণে আগামী দিনে ভারত-চিন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমীকরণ কী হবে তাই নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। 


চিন ইস্যুতে জো  
ভোট প্রচারে জো একাধিকবার  চিনের বিরোধীতার করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিংপিংকে একজন গুণ্ডা বলেও চিহ্নিত করেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিন নীতির সমালোচনা করলেও  সরব হয়েছিলেন চিনের আন্তর্জাতিক নীতি নিয়ে। পাশাপাশি জো জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার আমলেই প্রথম চিন সম্পর্কে যে ডেমোক্র্র্যাটদের নীতির পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন ট্রাম্প সেই নীতি কিছুটা হলেও অনুসরণ করেছিলেন। অন্যদিকে করোনাভাইরাসকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের মত চড়া ভাষায় না হলেও বেজিং-এর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন জো বাইডেন। 


ভারত সম্পর্কে জো 
জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় সরব হয়েছিল। কাশ্মীর ইস্যুতে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। সমালোচনা করেছিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের। সেই সময় জো বলেছিলেন, ভারতের আভ্যন্তরীন বিষয় সম্পর্কে আমেরিকা জোর করতে পারে। কিন্ত ভারত সরকারকে কোনও রকম সুবিধে দিতে পারবে না। ওবামার উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে বাইডেনই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারেই তিনি বলেছিলেন ভারত যথেষ্ট শক্তিশালী দেশ। ভারতকে গুরুত্ব দিতেই হবে। 


জো এলে হতে পারে 
বর্তমানে ভারত পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। সীমান্তে রোজই চলছে গোলাগুলি। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি স্থিতিশীল চ্যালেন প্রবর্তন করতে পারে জোএর প্রশাসন। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুর লড়াই আরও শক্তিশালী হতে পারেষ ট্রাম্প জলবায়ু পরিবার্তনের জন্য চিন ও ভারতকে দায়ি করে চিক্তি থেকে সরে এসেছিলেন। কিন্তু বিডেন প্রথম থেকেই জলবায়ু আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ভারতীয়েদের এইট-১বি ভিসার সমস্যাও মিটতে পারে। ট্রাম্প এই ভিসা নিয়ে যথেষ্ট কড়াকড়ি শুরু করেছিলেন যা অস্বস্তি বাড়িয়ে ছিল আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের। বাইডেনের উপরাষ্ট্রপতি ভারতীয় কমলা হ্যারিস। যা ভারতীদের পক্ষে একটা অ্যাডভানটেজ হতেই পারে। 
 

বেজিং-এর না 
২৭৯ ইলোক্ট্রোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জো বাইডেন আর উপরাষ্ট্রপতি পদে জয়ী কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং বাইডেনকে কোনও রকম অভিনন্দন জানাননি। তাঁর মতে ভোটের ফলাফল এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত হয়নি। হোয়াইট হাউসের দখলদারি নিয়ে ট্রাম্প আইনি পথে হাঁটতে পারেন। ট্রাম্পের সঙ্গে শি জিংপিং-এর বরফ শীতল সম্পর্ক ছিল তা বাইডেনের আমলে কাটবে কিনা তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।