সংক্ষিপ্ত
সংসদে নির্বাচিত নন, তবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেতা করা হল। হল। এবার থেকে কি দিল্লিতে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, কেন এই সিদ্ধান্ত?
ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের জন্য কৌশল সাজাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নিজেদের উপস্থিতি জাহির করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ওই দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলগুলিকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নতুন চেয়ারপারসন হবেন, ২৬ জুলাই মমতা দিল্লি যাচ্ছেন। ঠিক তার আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে তৃণমূলের সংসদীয় দলনেত্রী হিসাবে মনোনীত করা হল। এবার থেকে কি দিল্লিতে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করবেন মমতা, যেমনটা বঙ্গ ভোটের আগে করতেন বিজেপির দিল্লির নেতারা?
শুক্রবার, ২৩ জুলাই তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ান জানান, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় লোকসভায় তৃণমূলকে নেতৃত্ব দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আগে হাতো গোনা কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী সংসদে নির্বাচিত না হয়েও দলের সংসদীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে, সনিয়া গান্ধীও একই ভূমিকা পালন করেছিলেন কংগ্রেসের হয়ে। মমতার এই দায়িত্ব গ্রহণ, বৃহত্তর জাতীয় ভিত্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ডেরেক ও'ব্রায়ান বলেছেন, এটা তাঁদের দলের 'কৌশলগত সিদ্ধান্ত'। বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, যোগী আদিত্যনাথ-সহ বিজেপি তাদের ভোট মেশিনারির সবটা কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, বিরাট জয় পেয়েছেন। আর এরপরই জাতীয় ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। শরদ পওয়ার থেকে শুরু করে অনেক আঞ্চলিক দলের নেতাই এখন বিজেপি বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে মমতাকে দেখতে চাইছেন, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই টেক্কা দিতে পারবেন এমনটা মনে করছেন তাঁরা।
এই অবস্থায় তৃণমূল সংসদীয় দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করে আগামী দিনে দিল্লিতে আরও বেশি সময় দেবেন মমতা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। ২১ জুলাই-এর মঞ্চ থেকেই মমতা জানিয়েছিলেন, তিনি ২৬ তারিখ দিল্লি যাবেন। বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে বিরাট জয়ের পর এই প্রথম দিল্লিতে পা রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর এই সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজধানীর রাজনীতিতে বেশ সাড়া পড়ে গিয়েছে।
তাঁর ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্য়েই এই সফরের প্রস্তুতি নিতে দিল্লিতে এসেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন তিনি। তবে, তার বাইরে সনিয়া গান্ধী, শরদ পওয়ার-সহ বহু বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও জোটের সলতে পাকানোর কাজ করবেন তিনি, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। ফলে সংসদীয় দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করা আসলে মমতার দিল্লির দিকে আরেক পা এগোনো, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।