‘ডেঞ্জার জ়োন’-এর বাড়ি না ভাঙলে আরও বিপদে পড়বে জোশীমঠ, জোরকদমে চলছে বাড়ি ভাঙার কাজ
বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত ছিল, আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গেলে অতি দ্রুত ভেঙে ফেলতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি। সেই পরামর্শ মেনে প্রতিনিধি দলের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে বাড়ি ভাঙার কাজ
| Published : Jan 10 2023, 03:14 PM IST / Updated: Jan 10 2023, 03:33 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
উপগ্রহ থেকে ছবি তুলে চিহ্নিত করে করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে জোশীমঠের একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি। আজই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাঠানো প্রতিনিধি দল।
৫ এবং ৬ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডের সরকার সৃষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত ছিল, আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গেলে অতি দ্রুত ভেঙে ফেলতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি। সেই পরামর্শ মেনে প্রতিনিধি দলের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে বাড়ি ভাঙার কাজ।
ভূমি অবনমনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত জোশীমঠে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করার জন্য দেবভূমিকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করেছে প্রশাসন।
এই তিনটি ভাগের নাম দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ‘ডেঞ্জার জ়োন’ বা বিপজ্জনক, ‘বাফার জ়োন’ বা অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক এবং ‘সেফ জ়োন’ বা নিরাপদ।
সবথেকে বেশি বিপজ্জনক বাড়িগুলি ‘ডেঞ্জার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং সেগুলিতে লাল কালি দিয়ে দাগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই বাড়িগুলিই আগে ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়ে গেছে। কারণ, বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেঙে যাওয়া বাড়িগুলি আশেপাশের কম ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে আরও ক্ষতি করে দিতে পারে।
জোশীমঠে এখনও অবধি মাটি বসে যাওয়ার কবলে পড়েছে মোট ৬৭৮টি বাড়ি। এর মধ্যে শুধু সোমবার নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে ৬৮টি বাড়িতে। তার মধ্যে যে বাড়িগুলি কোনওভাবেই সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়, সেগুলিকে আগে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাঠানো প্রতিনিধি দলের ৯টি টিম মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে জোশীমঠে। ৩ থেকে ৪ সদস্যবিশিষ্ট এই দলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে আর বিপজ্জনক বাড়িগুলি চিহ্নিত করার কাজ করছে।
বাড়ি ভাঙার সময় আশপাশের অন্য বাড়ির উপর যাতে ভাঙনের প্রভাব না পড়ে, তা খেয়াল রাখছে এই বিশেষ দল।
জোশীমঠের ৪টি পুরসভা এলাকায় নতুন করে ১০০টির বেশি বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। অবিলম্বে সেখানে বসবাসরত পরিবারগুলিকে সরকারি ক্যাম্পে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রুরকির কেন্দ্রীয় আবাসন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-এর তত্ত্বাবধানে জোশীমঠের বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙা হচ্ছে। তাদের সহায়তা করছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
জোশীমঠের বিপর্যয়কে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলা যাবে কি না, সেবিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ইতিমধ্যে এটিকে ‘বিপর্যয়প্রবণ এলাকা’ হিসাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। যে কোনও রকমের নির্মাণকার্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
জোশীমঠ শহরটি মূলত ভূমিধসপ্রবণ এলাকার উপরেই তৈরি। তাই সেখানকার মাটি আলগা। তার উপর অবাধে পাহাড় কেটে নগরের সম্প্রসারণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণের মতো কাজে শহরের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।