সংক্ষিপ্ত
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে। বিমান বন্দরের বাইরে বিশৃঙ্খলায় নিহত হয়েছে ৭ জন। জানিয়েছেন ব্রিটেন।
তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই দেশে ছাড়ার পর থেকেই ধুম পড়ে গেছে। কাবুল বিমান বন্দরের সামনে সাধারণ আফগানদের জটলা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রবিবার বিট্রেন জানিয়েছেন কাবুল বিমানবন্দরের কাছে বিশৃঙ্খলার কারণে সাত আফগান নাগরিক নিহত হয়েছে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক সদস্য জানিয়েছেন চলতি মাসেই আমেরিকা আর মিত্রশক্তি আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। তারপর থেকেই তালিবানরা দ্রুতগতিতে আফগানিস্তানের দখল নিতে শুরু করে। এই অবস্থান সাধারণ আফগানরা নিজেদের জীবন হাতে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাতেই বিশৃঙ্খলার কারণে এই মৃত্যু বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিটেনের স্কাই নিউদ শনিবার বিমান বন্দরের বাইরে সাদা কাপড়ে ঢাকা তিনটি মৃতদেহ ছবি দেখিয়েছে। স্কাই নিউজের রিপোর্টারের মতে, প্রবল ভিড় আর হুড়োহুড়ির কারণে পিষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে। কাবুল বিমান বন্দর সংলগ্ন এলেকায় জলেরও তীব্র হাহাকার দেখা দিয়েছে। যা স্থানীয়দের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্রিটেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে আফগানিস্তানের বাস্তব অবস্থা যথেষ্টই চ্যালেঞ্জিং। তবে স্থানীয়দের নিরাপত্তার সঙ্গেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হচ্ছে।
Afghanistan Crisis: কাবুল দখলের ৭দিন পরেও মাথা উঁচু মাসুদের, তালিবানদের কাছে চ্যালেঞ্জ পঞ্জশির
বিট্রেনের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, গত ১৩ অগাস্ট থেকে এপর্যন্ত ৪ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিরক্ষা সচিব বেল ওয়ালেস বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৩১ অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শেষ করবে। কিন্তু আফগানিস্তানের পরিস্থিতি বিবেচনা করে জো বাইডেনের প্রশাসনের কাছে তাঁর আবেদন সময়সীমা আরও বাড়ানো হোক। বাইডেনকে তিনি একটি মেইলও করেছেন বলে সূত্রের খবর। সেখানে তিনি বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব।
Afghanistan Crisis: ভারতীয় কনস্যুলেটের শৌচাগারে তল্লাশি তালিবানদের, নজরে গুরুত্বপূর্ণ নথি
এখনও পর্যন্ত কাবুল বিমান বন্দরের ভিতরে মার্কিন সেনার আধিপত্য বজায় রয়েছে। কিন্তু বিমান বন্দরের বাইরে চলছে তালিবানি শাসন। গত রবিবার কাবুল দখলের পর থেকেই তালিবানি আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে আফগানদের, বিশেষত সরকারি কর্মী আর আফগান সেনা বাহিনীতে নিযুক্ত ছিলেন যাঁরা তাদের। আফগানিস্তানের অনেক সাধারণ মহিলা আর পুরুষ গত ২০ বছর ধরে ন্যাটোবাহিনীকে তালিবানদের গতিবিধির গোপন খরর দিয়ে আসছিলেন। তালিবান-রাজ জারি হওয়ার পরে তাদেরও আতঙ্ক বাড়ছে। এই অবস্থায় হয় তালিবান মধ্যযুগীয় বর্বর শাসন মেনে নেওয়া অথবা দেশ ছেড়ে পালানো- এই দুটি পথ ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা নেই তাদের সামনে। এই অবস্থায় অনেকেই প্রাণ হাতে করে ভিটে মাটি ছেড়ে কাবুল বিমান বন্দরে প্রবেশের মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছেন। তাতেই বাড়ছে সমস্যা।
অন্যদিকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন দুর্বল আর সব হারানো মানুষদের পুনর্বাসন দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগামী সপ্তাহে G-7 বেঠকও আফগান সমস্যাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
একটি সূত্র বলছে পরিস্থিতি বিবেচনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি দিন আফগানিস্তানে থাকতে পারে। জো বাইডেনও বলেছেন বিমানের সময়সীমা বাড়ান হতে পারে। তবে আফগানিস্তানের মাটিতে যে মার্কিন সেনা আর ফিরবে না তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।