সংক্ষিপ্ত
আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর তালিবানরা স্বমহিমা ধারন করেছে। হাজারো নেতার মূর্তি গুঁড়িয়ে দিয়ে তারই প্রমাণ দিচ্ছে।
মুখে শান্তির কথা বললেই তালিবান যে সে পথের ধারে দিয়েও যাবে না তা আরও একবার প্রমাণ হল। আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার কয়েক দিনের মধ্যেই তালিবানরা বামিয়ানে হাজারা নেতা আব্দুল আলি মাজারির মূর্তি ভেঙে ফেলেছে বলে অভিযোগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় আগের আর বর্তমান পরিস্থিতির ছবি পোস্ট করেছেন মানবাধিকার কর্মী সেলিম জাভেদ। ক্যাপশানে তিনি লিখেছেন 'সাধারণ ক্ষমার থেকেও এটি অনেক বেশি।' পাশাপাশি সেলিম জাভেদ আরও বলেছেন, 'তালিবানরা বামিয়ানে নিহত হাজারা নেতা আব্দুল আলি মাজারির মূর্তিটি উড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে তালিবানরা যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন এই নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। বিশাল একটি বুদ্ধ মূর্তি ভেঙে দিয়েছিল। একই সঙ্গে সেই সময় তালিবানরা দেশের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাসী আর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও নষ্ট করে দিয়েছিল। '
শুধু সেলিম জাভেদ নন, বমিয়ানে মূর্তি ভাঙার ছবি বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দাও করেছে অনেকে। তালিবানরা ২০০১ সালে তৎকালীন নেতা মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের বমিয়ান বুদ্ধের একটি বিশাল মূর্তি ধুলোয়ে মিশিয়ে দিয়েছিল। আব্দুল আলি মাজারি তালিবান বিরোধী যুদ্ধে প্রথম সারির নেতা ছিলেন। আগেরবার ক্ষমতায় আসার পর তালিবানরা তাঁকে অপরহণ করে। তালিবানি কায়দায় তাঁকে হত্যা করে ১৯৯৫ সালে গজনিতে একটি হেলিকপ্টার থেকে নিহত হাজারা নেতার দেহ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল।
হাজারি আফগানিস্তানের একটি উপজাতী। মূলত আফগানিস্তানের মধ্য পার্বত্য অঞ্চলে এই উপজাতীর বাস। এরা মূলত শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের হয়ে থাকে। সুন্নি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। অনেক ঐতিহাসিকরা মনে করেন হাজারারা মঙ্গল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৩ শতকে মঙ্গলরা এই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
Afghanistan Women: বোরখা নিয়ে উলটপুরাণ তালিবান নেতার, হিজাবেই সায়
'আফগান ভাই ও বোনেদের সাহায্য করতে হবে', মন্ত্রিসভার বৈঠকে বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
মহিলাদেরও স্বাধীনতা নিয়ে বড় প্রতিশ্রুতি, আগের তালিবানদের থেকে দূরত্ব বাজায় রাখল বর্তমানরা
তালিবানদের আফগানিস্তান দখলের পরই উদ্বেগ বাড়ছে হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে। দেশের মহিলা জেলা শাসকদের মধ্যে একজন সালিমা মাজারি বর্তমানে তালিবানদের হেফাজতে রয়েছে। সালিমা বালখের চাহারকিন্টের হাজার জেলার গর্ভনরের দায়িত্বে ছিলেন। যদিও তালিবানবা মঙ্গলবারই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে ছিলেন, তারা তাদের শত্রুপক্ষকে ক্ষমা করে দিয়েছে, কারও বিরুদ্ধেই প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। মহিলারাও সরিয়ত আইনমেনে কাজ করতে পারবে। কিন্তু তারপরেও মূর্তি ভাঙা মহিলা জেলা শাসককে আটকে রাখা- এজাতীয় কাজকর্মে তালিবানদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।