বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (CID) 'জয় বাংলা ব্রিগেড' এর একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আরও ২৬০ জনকে পলাতক ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ক্রমশই কঠিন কঠোর হচ্ছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর অনুগামীদের জন্য। একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (CID) 'জয় বাংলা ব্রিগেড' প্ল্যাটফর্মের সাথে সম্পর্কিত একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আরও ২৬০ জনকে পলাতক ঘোষণা করে একটি নোটিশ জারি করেছে। ঢাকা ট্রিবিউনের মতে, শুক্রবার ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষায় প্রকাশিত এই নোটিশটি সিআইডির বিশেষ সুপারিনটেনডেন্ট জসিম উদ্দিন খানেক স্বাক্ষরিত এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশের পর এটি প্রকাশিত হয়।
নোটিশটি বাংলাদেশের দুটি সংবাদপত্র, দ্য ডেইলি স্টার এবং আমার দেশ-এ প্রকাশিত হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১৯৬ ধারার অধীনে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে সিআইডি এই রাষ্ট্রদ্রোহের তদন্ত শুরু করে। ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তে "জয় বাংলা ব্রিগেড" নামক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে বৈধ সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্ল্যাটফর্মটির মতে, এই ব্রিগেড শেখ হাসিনা এবং তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহ্য ও নেতৃত্বের একনিষ্ঠ সমর্থক।
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ব্রিগেডটি "বিশ্বকে জানাতে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে যে ডঃ ইউনূস [বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা] একজন সূক্ষ্ম পরিকল্পনাকারী এবং একজন হত্যাকারী এবং মব জাস্টিসের জনক, যিনি বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থাকে সাহায্য ও মদত দিয়েছেন।" সার্ভার এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ডিজিটাল ডেটার ফরেনসিক বিশ্লেষণ সহ তদন্ত শেষ করার পর, সিআইডি শেখ হাসিনা সহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে একটি চার্জশিট দাখিল করে।
ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১৭-এর বিচারক আরিফুল ইসলাম শেখ হাসিনা এবং আরও ২৬০ জনকে পলাতক ঘোষণা করেন এবং নোটিশ প্রকাশের নির্দেশ দেন।
এদিকে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করেছে এবং ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ শাসনামলে একাধিক ব্যক্তিকে নির্যাতন এবং গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এরপর, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।


