সংক্ষিপ্ত
ছাত্র-জনতা বিক্ষোভের কাছে শেষপর্যন্ত কেঁপে গিয়েছিলেন চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। যদিও শেষ সময় পর্যন্ত ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছিলেন । সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন কিছুটা হলেও থিতিয়ে যায়। তবে শনিবার থেকে বাংলাদেশে হাসিনার পদত্যাগ-মাত্র একটি দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। রবিবার তা চরম আকার নেয়। শুধুমাত্র রবিবারই গোটা দেশে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। তারপরই দেশজুড়ে কার্ফু জারি করে হসিনা সরকার। কিন্তু সেখান থেকেই বিরোধ বাধে সেনা বাহিনীর। এই অবস্থায় সেনা প্রধান জানিয়ে দেন হাসিনার নির্দেশ কার্যকর করতে রাজি নয় বাংলাদেশ সেনা বাহিনী। তাতেই হাসিনা সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে পড়ে।
রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মানতে রাজি ছিল না বাংলাদেশের সেনা বাহিনী। হাসিনা বাংলাদেশের সেনা বাহিনীর আস্থা হারিয়েছিলেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাসিনার দেওয়া কার্ফু বলবৎ করার জন্য সেনা বাহিনী গুলি চালাবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল। সোমবার সেনা জেনারেল ওয়াকার উজ জামান সকালেই হাসিনার অফিসে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি স্পষ্ট করে সেনাবাহিনীর বার্তা পৌঁছে দেন হাসিনার কাছে। পাশাপাশি ওয়াকার জানিয়ে দেন বাংলাদেশের সেনার সমর্থন সম্পূর্ণভাবে হারিয়েছেন হাসিনা। উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্য়ে একটি অনলাইন বৈঠক হয়। সেখানেই হাসিনার বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই বৈঠকের কথাও জানান।
সূত্রের খবর, টানা ১৫ বছর দেশের শাসন ছিল শেখ হাসিনার হাতে। সেই সময় তাঁর সজনপোষণ, দুর্নীতি মেনে নিতে রাজি ছিল না বাংলাদেশের সেনা। আর সেই কারণে দেশের সেনা সদস্যরা দেশের মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে রাজি ছিল না।
সেনা বহিনীর মুখপাত্র ল্যাফটেন্যান্ট কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী রবিবার সন্ধ্যায় সেনা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে হওয়া বৈঠকের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে বলেছেন, যে কোনও অশান্তির সময় আপডেট নিয়ে নিময়িত যেমন বৈঠক হয় এটাও ছিল সেই রকম। তবে তার বেশি আর কিছু জানাননি।
যদিও হাসিনার ছেলে জানিয়েছেন, রবিবার থেকেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করছিলেন। পরিবারের সদস্য ও দলের ঘনিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করার আগে কেন ৯৩ জনের মৃত্যু হল তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেননি হাসিনার ছেলে।
হাসিনা গত ৩০ বছরের মধ্যে ২০ বছরই বাংলাদেশের হাজার হাজার বিরোধী নেতা কর্মীকে গ্রেফতারের পরে জানুয়ারিতে ১৭ কোটির দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই নির্বাচন বিরোধীরা বয়কট করে। দেশে বেকারি বাড়ছিল, দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। সবমিলিয়ে চাপ বাড়ছিল হাসিনার ওপর। হাসিনার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার অভিযোগও উঠেছিল। তবে সেনা প্রধান জামান, সাংবাদিক বৈঠকে বলেননি, সেনা বাহিনী হাসিনার ওপর সমর্থন প্রত্য়াহার করে নেওয়ায় তাঁকে পদত্য়াগ করতে হয়েছিল। সেনা প্রধান শুধু জানিয়েছিলেন হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।