সংক্ষিপ্ত
মন্দিরে যাওয়ার পরে হিন্দুদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেলেন বাংলাদেশে তালিবান শাসনের স্বপ্ন দেখা তথা হিন্দু নিধন যজ্ঞের পুরোধা। সোমবার থেকেই দেশজুড়ে হিন্দুদের উপরে নির্যাতন চালাতে শুরু করেছে জামায়েত ইসলামী-সহ মুসলিম মৌলবাদী দলগুলি।
শেখ হাসিনা পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে। বাংলাদেশে অশান্তি থামার নামও নিচ্ছে না। বিএনপি ও জামায়েত ইসলামির সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর ইন্ধনে শুরু করে দিয়েছে হিন্দুদের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করার মারধরের কাজ। ভাঙচুর চলছে মন্দির-উপাসনালয়। বৃহস্পতিবার ওই কুকর্মের হোতাদের নাটের গুরু তথা জামাত ইসলামির আমির শফিকুর রহমান আচমকাই হিন্দুপ্রেমী সাজতে হাজির হয়েছিলেন ঢাকার ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দিরে।
আর মন্দিরে যাওয়ার পরে হিন্দুদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেলেন বাংলাদেশে তালিবান শাসনের স্বপ্ন দেখা তথা হিন্দু নিধন যজ্ঞের পুরোধা। গত সোমবার থেকেই গোটা দেশজুড়ে হিন্দুদের উপরে নির্যাতন চালাতে শুরু করেছে জামায়েত ইসলামী-সহ মুসলিম মৌলবাদী দলগুলি। বিভিন্ন জায়গায় মন্দির দখল করে নিয়েছে। হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। খোদ রাজধানী ঢাকায় পুড়িয়ে দিয়েছে গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়ি ও স্টুডিও।
একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের তরফে বাংলাদেশ জুড়ে হিন্দুদের উপরে চলা নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ হয়েছে। আর তাতে খানিকটা চাপে পড়ে হিন্দুপ্রেমী সাজতে এদিন সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান জামায়েতের আমীর তথা কুখ্যাত জঙ্গি শফিকুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন আর এক হিন্দু নিধন যজ্ঞের হোতা সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের। তিনি দু'দিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
জামায়েতের আমীরকে দেখেই ক্ষোভ উগরে দেন ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার রায়, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার রায়, ঢাকেশ্বরী মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চিত্তরঞ্জন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক দীপেন চট্টোপাধ্যায়রা। জয়ন্ত কুমার রায় জামায়াত নেতাদের সরাসরি প্রশ্ন করেন, 'যখন সরকার পরিবর্তন হয়, তখন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে অত্যাচার হয় কেন? কোটা আন্দোলনে কী হিন্দুরা মারা যাননি? হিন্দুদের কোনও অবদান নেই? তাহলে মন্দির পোড়ে কেন? আমার ব্যবসা লুটপাট হয় কেন? আমার মা-বোনের ইজ্জত যায় কেন? আপনারা বলেন দুর্বৃত্তরা করছে। কিন্তু নামটা হয় আপনাদের। সবাই বলে জামাত ইসলামির কথা।'
জয়ন্তর মুখে এমন কথা শুনে খানিকটা হতচকিত হয়ে পড়েন জামায়াতের আমীর। হিন্দুদের উপরে অত্যাচার হবে না, এমন আশ্বাস দিয়ে চটজলদি কেটে পড়েন শফিকুর। কার্যত কোনও উত্তর ছিল না তাঁর কাছে। উল্লেখ্য, হিন্দুদের ওপর তীব্র আক্রমণের ছিন্নভিন্ন হচ্ছে গোটা দেশ। তবে এবার ভিন্ন ঘটনা ঘটল। হাসিনা জমানার অবসানের পরেই বাংলাদেশ জুড়ে যেভাবে শুরু হয়েছে হিন্দু নিধন যজ্ঞ, তাতে আশঙ্কিত সকলেই। তবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের কমিটির রুখে দাঁড়ানোতে ভরসা পাচ্ছেন অনেকেই।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।