সংক্ষিপ্ত
- ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৫৪ জন সদস্য় একটি প্রস্তাব পেশ করেন
- ভারতের নয়া নাগরিকত্ব বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবটি পেশ করা হয়
- ওই আইনকে বিশ্বে রাষ্ট্রহীনতার পক্ষে সবচেয়ে বড় বিপদ বলে অভিহিত করা হয়
- কিন্তু বুধবার সেই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি পিছিয়ে যায় মার্চ অবধি
ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৫৪ জন সদস্য়দের আনা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি পিছিয়ে গেল মার্চ অবধি। এই ঘটনাকে কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি। প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৫৪ জন সদস্য় এই আইনকে "বিশ্বে রাষ্ট্রহীনতার পক্ষে সবচেয়ে বড় সঙ্কট ও মানুষের দুর্দশার কারণ" বলে আখ্য়া দিয়েছে সম্প্রতি। তারপর শুধু সেখানেই থেমে থাকেননি তাঁরা, রীতিমতো একটি প্রস্তাব তৈরি করে ফেলেছিলেন। যা এই সপ্তাহে ব্রাসেলসে পার্লামেন্টের অধিবেশনে পেশ হওয়ার কথা ছিল ভোটাভুটির জন্য়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে যে, "ভারতের এই নতুন আইন সরকারের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডাকে তুলে ধরে অত্য়ন্ত বিপজ্জনক একটি নজির তৈরি করেছে। এই আইনের নেচার বা প্রকৃতিই হল বিভাজনকামী, কারণ এতে অন্য় ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির যে অধিকার তার থেকে মুসলিমদের বিভেদ ঘটানো হচ্ছে।"
সূত্রের খবর, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৬ টি দেশের সদস্য়দের নিয়ে গঠিত প্রগতিশীল এস অ্য়ান্ড ডি গোষ্ঠী এই প্রস্তাবের নেপথ্য়ে রয়েছে। প্রস্তাবে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, "মানবাধিকার, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা আর সব ধরনের জাতি বৈষম্য় দূর করার লক্ষ্য়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের প্রতি ভারতের দায়বদ্ধতার পরিপন্থী।" রাষ্ট্রপুঞ্জ রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে নিপীড়িত আখ্য়া দিলেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে তাদের কেন বাদ রাখা হল, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভারতে বসবাসকারী তামিল উদ্বাস্তু, পাকিস্তানের আহমেদি ও হাজারা, বাংলাদেশের বিহারি মুসলিমদের প্রতিও এই আইন বৈষম্য়মূলক বলে মনে করছে প্রস্তাবটি।
এদিকে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি খারিজ হয়ে যাওয়াকে কূটনৈতিক জয় বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। পার্লামেন্টের ভারতীয় বংশোদ্ভূত দুই সদস্য় দীনেশ ধামিজা আর নীনা গিল ভারতের পক্ষে সওয়াল করেন। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে 'ভুল তথ্য়'র বিরুদ্ধে এঁরা বক্তব্য় রাখেন। ওঁদের বক্তব্য়ের জেরেই বুধবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের যুগ্ম অধিবেশনে প্রস্তাবটিকে রাখা হয় ভোটাভুটির জন্য়। যা পিছিয়ে যায় মার্চ অবধি।