একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক যুবক ও যুবতী। আর যুবকের গায় ঢাকা পয়েছে উইক্রেনের জাতীয় পতাকা দিয়ে। আর যুবতীর গায়ে রাশিয়ার পতাকা।

বৃহস্পতিবার সকালটা হয়তো তখনও ঠিক করে শুরু হয়নি। মনের মধ্যে আশঙ্কা নিয়ে একটু একটু করে ঘুম ভাঙছিল ইউক্রেনবাসীর। আর তার মধ্যেই বদলে যায় গোটা পরিস্থিতি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের 'সেনা অভিযামন'-এর কথা ঘোষণা পরই বদলে যায় গোটা শহরের ছবিটা। ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে গুলি বর্ষণ শুরু হয়ে যায়। তারপর থেকে চারিপাশে শুধুই আতঙ্ক। সবার চোখে মুখে শুধুই ভয়। কারণ ঠিক এর পরের মুহূর্তে কী হবে তা সবারই অজানা রয়েছে। প্রাণ ভয়ে বিভিন্ন প্রান্তে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। আর যাঁরা আশ্রয় নিতে পারেননি তাঁরা মৃত্যুর জন্য প্রহর গুনছেন। গোটা ইউক্রেনে এখন শুধু এই ছবি দেখা যাচ্ছে। আর এই যুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি। যা এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। 

কী সেই ছবি?
একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক যুবক ও যুবতী। আর যুবকের গায় ঢাকা পয়েছে উইক্রেনের জাতীয় পতাকা দিয়ে। আর যুবতীর গায়ে রাশিয়ার পতাকা। রাশিয়া ও ইউক্রেনের এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে এই ছবি ভাইরাল হয়েছে। যা এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন নেটিজেনদের একাংশ। এই ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও। 

শশী থারুরের টুইট
টুইটারে সেই যুবক-যুবতীর ছবি পোস্ট করে শশী থারুর লেখেন, "মর্মস্পর্শী: ইউক্রেনের পতাকা গায়ে দেওয়া এক যুবক, রাশিয়ার পতাকা গায়ে দেওয়া এক যুবতীকে আলিঙ্গন করেছেন। আশা করি যুদ্ধ ও সংঘাতের উপর ভালোবাসা, শান্তি এবং সহাবস্থানের জয় হোক।" তবে শুধুমাত্র কংগ্রেস সাংসদই নন এই ছবি শেয়ার করতে দেখা গিয়েছে অনেকেই। ছবির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে যাতে সব সংঘাত দূর হয়ে যায় সেই প্রার্থণা করেছেন অনেকেই। 

Scroll to load tweet…

কবে তোলা এই ছবি
এই ছবি এখনকার নয়। ছবিটি আসলে তোলা হয়েছিল ২০১৯ সালে। যা এই মুহূর্তে আবারও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ছবিতে যে যুবতীকে দেখা গিয়েছে তাঁর নাম জুলিয়ানা কুজনেৎসোভা। ২০১৯ সালে পোল্যান্ডে নিজের হবু স্বামীর সঙ্গে একটি কনসার্ট দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। ওই কনসার্ট থেকে বেরিয়েই তাঁরা এই ছবি তুলেছিলেন। আসলে সেই ২০১৪ সাল থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ভালোবাসার বার্তা দেওয়ার জন্যই ওই ছবি তুলেছিলেন তাঁরা। 

View post on Instagram

জুলিয়ানা বলেছিলেন, "আমি দেখতে পেলাম, ভিড়ের মধ্যে অনেক দেশের পতাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তা দেখে আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এল। আমরা দুই দেশের পতাকা কিনে গায়ে জড়িয়ে একজনকে বললাম আমাদের একটা ছবি তুলে দিন। তবে ছবিটি তোলার পিছনে আমাদের কোনও ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু, ছবিটি ইন্টারনেটে আলোর বেগে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর আমরা ভালো-খারাপ সবরকম মন্তব্যই পাচ্ছিলাম। কিন্তু, তখনই আমি বুঝতে পারলাম, এরকম একটা ছবি হয়তো মানুষকে এই আশা দিতে পারে যে, যাই হোক না কেন শেষে সবকিছুই ভালো হতে পারে, ভালোবাসা সবকিছুকে জয় করতে পারে।"